নওগাঁর নিয়ামতপুরে প্রেমগোসাই মেলায় যাত্রাপালার নামে অশ্লীলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৪শে জানুয়ারী ২০২৫ ১০:২৯ অপরাহ্ন
নওগাঁর নিয়ামতপুরে প্রেমগোসাই মেলায় যাত্রাপালার নামে অশ্লীলতা

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুজিশহরে ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলায় যাত্রাপালার আড়ালে রাতভর অশ্লীল নৃত্য পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ মেলায় নাচের নামে নগ্নতায় আকৃষ্ট হয়ে ভিড় করছে তরুণ-যুবকসহ নানা বয়সী মানুষ। তারা আশঙ্কা করছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে এলাকার যুবসমাজ বিপথগামী হতে পারে।  


প্রতিবছরের মতো এবারও মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও এবারের ইজারার মূল্য উঠে গেছে ১ কোটি ২ লাখ টাকায়। স্থানীয়রা বলছেন, মেলার আড়ালে অশ্লীল শো করার উদ্দেশ্যেই এতো বড় বাজেট নির্ধারণ হয়েছে। ২৩ জানুয়ারি থেকে রাত ১১টা থেকে ভোর পর্যন্ত যাত্রাপালার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য। এ শো দেখতে দর্শকদের জনপ্রতি ৪০০ থেকে ২০০০ টাকা টিকিট কাটতে হচ্ছে।  


স্থানীয় বাসিন্দা স্বাধীন কমার জানান, এর আগে যাত্রাপালা দেখেছেন, তবে এমন নগ্ন নৃত্য আগে কখনো দেখেননি। তার মতে, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম চালানো অসম্ভব। আরেক ব্যক্তি, আতোয়ার রহমান বলেন, এই আয়োজন বিশেষ করে তরুণদের আকৃষ্ট করছে, যা সমাজের জন্য বিপজ্জনক। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ আয়োজনের পেছনে থাকায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।  


অভিযোগ রয়েছে, মেলার সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন নিজ দপ্তর থেকে মেলার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তার সঙ্গে মো. ইমরানসহ আরও কয়েকজন মেলার ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন। প্রতিদিন বিপুল অর্থ আসছে, যা তারা ভাগাভাগি করছেন।  


এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি।  


নিয়ামতপুর থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, অশ্লীল নৃত্যের বিষয়ে পুলিশ প্রমাণ সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। নির্দেশনা পেলেই কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।  


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান জানান, মেলার নামে অশ্লীলতার অনুমতি দেওয়া হয়নি। অভিযোগের প্রমাণ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেলার কার্যক্রম পরিচালনা বেআইনি উল্লেখ করে তিনি বিষয়টি তদন্ত করার আশ্বাস দেন।  


এ ধরনের অশ্লীলতার মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী মেলার ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় স্থানীয়রা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।