বরিশালে উর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার, দিশেহারা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শনিবার ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৪:৫৯ অপরাহ্ন
বরিশালে উর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার, দিশেহারা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার

বরিশালের বাজারে নতুন করে বেড়েছে পেঁয়াজ, চিনি, ডিম ও ফার্মের মুরগির দাম। একই সঙ্গে বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির দামও। মাছের বাজারও চড়া। চাল ও ভোজ্যতেলসহ অন্য নিত্যপণ্য আগের বাড়তি দামেই আছে। বাজার করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার।


শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর পোর্টরোড ও বটতলা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। বিক্রেতাদের দাবি সরবরাহ কম থাকায় পণ্যের দাম বেশি। অপরদিকে ক্রেতা সাধারণের দাবী, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার কারণেই নিত্যপণ্যের বাজার চড়া। তারা এ ব্যাপারে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানান।


সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি টমেটো ৩০ থেকে বেড়ে ৪০ টাকা, ৬০ টাকার বেগুন ৮০ টাকা, ৫০ টাকার চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে বেড়ে ৩০ টাকা, শসা ৫০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, ধনেপাতা ৪০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ঝিঙে ৬০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে বেড়ে ৪০ টাকা ও বাঁধাকপি ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৪০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।


খোলা চিনি প্রতি কেজি ৭৬ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮ এবং প্যাকেট চিনি ৮৩ থেকে বেড়ে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট আটা ৪০ এবং প্যাকেট ময়দা ৫৫ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। নগরীর পোর্টরোড বাজারে কেনাকাটা করতে আসা সুলতান খান বলেন, নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে। নগরীর পোর্টরোড বাজারের খুচরা মুদি দোকানি জায়াত স্টোরের মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম পাইকারি বাজারে ঊর্ধ্বমুখী। তাই খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। আমরা খুচরা বিক্রেতা। দাম বাড়ার বিষয়ে ভালো বলতে পারবো না। সামনে রোজা। তাই হয়তো দাম বাড়ছে।অপরিবর্তিত আছে রসুন, আদা, মসুর ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম। খোলা সয়াবিনের কেজি ১৬৮ টাকা এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ১৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।


প্রতি কেজি আদা (দেশি) ৮০ টাকা, চায়না আদা ১২০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ টাকা, চায়না রসুন ১২০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল ৯৫ টাকা এবং ছোট দানার মসুর ডাল ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি চালের দামেও কোনো হেরফের হয়নি। বাজারে  মিনিকেট চাল মানভেদে ৬০-৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৭০ টাকা এবং বিআর-২৮ চাল ৫০-৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। এদিকে বাজারে বেড়েছে ফার্মের মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগির কেজি ২৫০ থেকে বেড়ে ২৬০ এবং কক বা লেয়ার ২৫০ থেকে বেড়ে ২৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দামও বেড়েছে। ফার্মের ডিমের দাম প্রতি হালি ৩৫ থেকে বেড়ে ৩৬-৩৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 



নগরীর বটতলা বাজারের মেসার্স রিয়াজ পোলট্রি ফিডসের মালিক মো. রিয়াজ বলেন, ফার্মের মুরগির খাবারের দাম বস্তা প্রতি ২০০ টাকা বেড়েছে। এজন্য খামার মালিকরা মুরগির দাম বাড়িয়েছে, তাই খুচরা বাজারেও বেড়েছে। গরু ও খাসির মাংসের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৮০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।


সরবরাহ কম থাকায় বাজারে মাছের দামও চড়া। আকারভেদে চাষের শিং মাছ প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা, রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৮০-২০০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, সাগরের ঢেলা ৩৪০-৩৬০ টাকা, আকারভেদে আইড় মাছ ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, দেশি শিং ৯৫০-১০০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।