কঠোর লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ পোশাক কারখানা খোলার ঘোষণায় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক বাসস্ট্যান্ডগুলোতে কর্মজীবী নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। যে যেভাবে পারছেন গন্তব্যে ফিরছেন।
শনিবার (৩১ জুলাই) সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কর্মস্থলে ফেরা মানুষদের ভিড় দেখা গেছে।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পদে পদে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। জেলার প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে মানুষের উপচে পড়া ভীড়।
গণপরিবহন না থাকায় খোলা ট্রাক, পিকআপ, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে কয়েকগুণ ভাড়ায় গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। আবার অনেককে দেখা গেছে পরিবহন সংকটে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে।
একই কথা বলছেন সিরাজগঞ্জের আসাদুল। তিনি সকালে নৌকাযোগে যমুনানদী পাড়ি দিয়ে কয়েক দফায় এলেঙ্গা এসে পৌঁছেছেন। এখন ঢাকা যেতে মাইক্রোবাসে ৭শ’ আর অটোরিকশায় ৫শ টাকা ভাড়া হাকা হচ্ছে। যা তার কাছে নেই। তাই হেঁটেই রওনা দিয়েছেন ঢাকার দিকে। পথে যেতে যেতে কম টাকায় যদি কোন ট্রাকে উঠতে পারেন সেই চেষ্টা করছেন তিনি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড়, টাঙ্গাইল বাইপাস, রাবনা বাইপাস, মির্জাপুর, গোড়াই এলাকায়। এর মধ্যেই প্রাকৃতিক বৈরি পরিবেশের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবার পরিজন নিয়ে যাওয়া মানুষজনের।
তেমনই একজন মিরপুরের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত জামালপুরের ছালমা আক্তার। তার সাথে সকাল সাড়ে এগারোটায় কথা হয় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। তিনি জানান, জামালপুর থেকে ভোর রাতে রওনা দিয়ে কয়েক দফায় ভেঙে ভেঙে নানা পরিবহন ও পায়ে হেঁটে এলেঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছেছেন। এখন কোন পরিবহনে উঠতে না পেরে আবার পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, চাকরি বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। সরকার যদি তাদের কথা বিবেচনা করে বাস খুলে দিত হবে এমন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।
এভাবেই পরিবার পরিজন নিয়ে যাওয়া মরিয়মের, আলতাফ, মনোয়ারা, ফারজানা, রফিকুল ইসলাম, মাসুদসহ আরও অনেকের সাথেই কথা হয়। সবাই অভিযোগ করে জানান, গণপরিবহন বন্ধ রেখে গার্মেন্টস খোলার সিদ্ধান্ত তাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছে, অমানবিক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা যাচ্ছে না। পশু পরিবহনের চেয়েও গাদাগাদি করে তাদের যেতে হচ্ছে। তবুও চাকরি রক্ষার্থে যেকোনভাবে কাল কাজে যোগ দিতে হবে। যেভাবে পারি যেতেই হবে। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যবিধিসহ ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে প্রশাসন ও প্রশাসনের তেমন একটা নজরদারি চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত ও বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি সফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।