বিদ্যালয়ের নথি চুরি, পাঁচ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো. নাঈম হাসান ঈমন, জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৪শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:৩৮ অপরাহ্ন
বিদ্যালয়ের নথি চুরি, পাঁচ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

ঝালকাঠির নলছিটির দক্ষিণ রানাপাশা পাবলিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ২০ জানুয়ারি রাতে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের তালা ভেঙে আলমারির ভেতর রাখা ৩০ হাজার টাকা এবং শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড, সার্টিফিকেট, বোর্ড অনুমোদনপত্র, উপবৃত্তি ও পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি যায়। এছাড়াও বিদ্যুৎ লাইনের তার কেটে নিয়ে গেছে চোরচক্র। একই রাতে পার্শ্ববর্তী উকিলবাজার কমিউনিটি ক্লিনিকেও তালা ভেঙে নগদ টাকা ও ওষুধ চুরি হয়েছে। তবে ঘটনার পাঁচ দিন পার হলেও নলছিটি থানা পুলিশ এখনো কোনো মামলা গ্রহণ করেনি।  


বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, পরদিন সকালে তিনি খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে এসে অফিস কক্ষের তালা ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। আলমারির তালাও ভাঙা ছিল। চুরি হওয়া কাগজপত্রের মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে, যা বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে অত্যন্ত জরুরি। বিদ্যুৎ লাইনের তার চুরি হওয়ায় বিদ্যালয়ের কার্যক্রমেও বিঘ্ন ঘটছে।  


স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন মাঝি, জালাল হাওলাদার ও আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, এই চুরির ঘটনা পরিকল্পিত। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল ইসলাম তোতা তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালনা করছেন। চোরেরা গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি করে বিদ্যালয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। তারা দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।  


বিদ্যালয়ের সভাপতি শহিদুল হক তোতা জানান, এমন ঘটনায় তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করেন, এটি বিদ্যালয়টির ভাবমূর্তি নষ্ট করার একটি চক্রান্ত। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।  


থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও মামলা গ্রহণ না করায় শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা পুলিশি কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এলাকাবাসী মনে করেন, দ্রুত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা না হলে এমন ঘটনা আরও বাড়তে পারে।  


নলছিটি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, চুরির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তবে এখনো মামলা রুজু করা হয়নি।  


এদিকে পার্শ্ববর্তী উকিলবাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে একই রাতে চুরির ঘটনা ঘটায় স্থানীয়রা মনে করছেন, এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।  


বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও স্থানীয়রা ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে চোরদের শনাক্ত এবং বিদ্যালয়ের চুরি যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ নথি পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। এতে প্রশাসনিক উদ্যোগের দ্রুততা এলাকাবাসীর মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সবাই।