প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ২১:৫৯
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা নতুন করে প্রাণহানির ঘটনা ঘটিয়েছে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিবৃতি অনুযায়ী, ৬ ও ৭ মে রাতের সংঘাতে পাকিস্তানের মোট ১৩ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার আরও দু’জন আহত অবস্থায় মারা যাওয়ার পর এই সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী একেবারে বিনা উসকানিতে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে হামলা চালায়। এসব হামলার লক্ষ্য ছিল নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক। ভারতীয় বাহিনীর এমন আচরণকে কাপুরুষোচিত এবং মানবিকতার পরিপন্থী বলে দাবি করে পাকিস্তান।
এই সংঘাতে পাকিস্তানের আরও অন্তত ৭৮ জন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন, যাঁরা বর্তমানে সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনাও উদ্বেগজনক। পাকিস্তানের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ১২১ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার মৃত্যুবরণকারী দুই সেনাসদস্য হলেন হাবিলদার মোহাম্মদ নাভিদ ও বিমান বাহিনীর সিনিয়র টেকনিশিয়ান মোহাম্মদ আয়াজ। আইএসপিআর বলেছে, এই দুই শহীদ দেশের জন্য তাঁদের জীবন উৎসর্গ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের আত্মত্যাগ জাতির জন্য গৌরবের বিষয় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে অপারেশন ‘সিঁদুর’ পরিচালিত হয়। এই অভিযানে ভারতীয় সেনারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরের ৯টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীও ভারতীয় বিভিন্ন সামরিক স্থাপনার দিকে পাল্টা হামলা চালায় বলে জানায়। এই পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে প্রায় ৭০ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে উভয় দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় তারা ৫ জন সৈন্য হারিয়েছে। তাদের মতে, এই আত্মত্যাগ দেশের নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য ছিল এবং জাতি তাদের চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ রাখবে।
এই সংঘর্ষে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা আরও বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে শান্তি স্থাপনের আহ্বান জানানো হলেও এখনো পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি।