ইরানের ৫৫০ ক্ষেপণাস্ত্রে কাঁপল ইসরায়েল, নিহত ২৮ ॥ ছবি প্রকাশ

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সরাসরি যুদ্ধের ১২ দিনে ইরান ইসরায়েলের দিকে প্রায় ৫৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং এক হাজারেরও বেশি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে জানা যায়, এই ভয়াবহ আক্রমণে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে ২৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ৩ হাজার ২৩৮ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এই হামলায় সবচেয়ে প্রবীণ যে ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, তার বয়স ছিল ৯৫ বছর। তিনি ছিলেন একজন হোলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তি। অন্যদিকে সবচেয়ে কমবয়সী নিহত ব্যক্তি ছিলেন মাত্র ৭ বছর বয়সী, ইউক্রেনীয় এক শিশু। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার মধ্যে দিয়ে যুদ্ধের নির্মমতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ইরানের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর বেশিরভাগই ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিহত হলেও অন্তত ৩৬টি ক্ষেপণাস্ত্র জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে। লক্ষ্যবস্তুতে ছিল আবাসিক ভবন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও হাইফা শহরের একটি তেল শোধনাগার। এতে ২৪০টি ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।

ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহত ২৮ জনের মধ্যে ২৭ জন বেসামরিক এবং একজন সেনা সদস্য ছিলেন, যিনি ছুটিতে ছিলেন। কোহেন অ্যাঞ্জেল নামের ৭৪ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে নিহত হন। তিনি তার প্রেমিকার সঙ্গে বসবাস করছিলেন, যিনি গুরুতর আহত হলেও বেঁচে যান।

এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে কোহেনের এক সাক্ষাৎকার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যেখানে তিনি বলেন, "জীবনের এই পর্যায়ে এসে আমি আমার শিশুকে খুঁজে পেয়েছিলাম—আনন্দ, কৌতুক ও দৃঢ়তা।"

এই সংঘাত শুধু দুই দেশের সীমান্তে সীমাবদ্ধ থাকছে না; এটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশ্বনেতারা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও বাস্তবতা হলো—মৃত্যুর মিছিল আর ক্ষয়ক্ষতি অব্যাহত রয়েছে।