প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১৬:৫৮
মালয়েশিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর মতাদর্শে প্রভাবিত হয়ে উগ্র জঙ্গি আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৬ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। সিকিউরিটি অফেন্সেস (স্পেশাল মেজারস) অ্যাক্ট ২০১২-এর আওতায় পরিচালিত এক অভিযানে এই বাংলাদেশিদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট অভিযোগে আদালতে তোলা হয়েছে এবং ১৫ জনকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল।
পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল জানান, এই অভিযানের অংশ হিসেবে সেলাঙ্গর ও জোহর প্রদেশে তিনটি ধাপে অভিযান চালানো হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন এখনো পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। মালয়েশিয়ার পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে, এই গোষ্ঠীটি একটি উগ্রপন্থী নেটওয়ার্ক গঠনের চেষ্টা করছিল, যারা বাংলাদেশে আইএস-এর আদলে চরমপন্থী সেল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছিল।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে চরমপন্থা ছড়ানো, তহবিল সংগ্রহ করা এবং দেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা করা। এমন চক্রান্ত মালয়েশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে এমন আশঙ্কায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় বাংলাদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশে অবস্থানকারী কিছু বাংলাদেশি যখন এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন, তখন তা দেশের ভাবমূর্তি ও প্রবাসী সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শ্রমিক পাঠানোর আগে আরও কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করা, প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকারের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর প্রভাব বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মালয়েশিয়ায় ধৃতদের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ না করা হলেও দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
প্রবাসী সমাজের নেতারা দাবি করছেন, গুটিকয়েকের কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটির সম্মান যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সে বিষয়ে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ জরুরি।