প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১১:৩৭
কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনার পর পরিস্থিতি একধরনের স্নায়ুযুদ্ধের দিকে মোড় নেয়। এ ঘটনার পেছনে পাকিস্তানের জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ভারতের গোয়েন্দা রিপোর্ট ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জেরে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয় দুদেশের মধ্যে।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার ভোররাতে পাকিস্তানের একাধিক শহরে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। তিন বাহিনী- স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী একযোগে এই অভিযান চালায়, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের দাবি, অভিযানে ৮০ থেকে ৯০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে এবং জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইয়্যেবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের অন্তত ৯টি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে।
সবচেয়ে বড় হামলাগুলোর একটি হয়েছে মুরিদকেতে, যেখানে লস্করের আদর্শিক ঘাঁটি ‘মারকাজ তাইয়্যেবা’ ধ্বংস করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাহাওয়ালপুরে একাধিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ভারত দাবি করেছে, এই অভিযানে সেনাঘাঁটি নয় বরং জঙ্গি ঘাঁটিই মূল লক্ষ্য ছিল।
পাকিস্তান এ ঘটনাকে “সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা” হিসেবে আখ্যা দিয়ে পাল্টা হামলা শুরু করেছে। তারা দাবি করেছে, ভারতীয় হামলায় তাদের ৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলি শুরু হয় এবং ভারতের ৩ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।
জিও নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তান পাল্টা হামলায় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান, একটি ড্রোন এবং একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করেছে। বিশেষ করে বার্নালা সেক্টরে ভারতীয় একটি ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনাকে পাকিস্তান কৌশলগত সাফল্য হিসেবে দেখছে।
এদিকে সীমান্ত পরিস্থিতির অবনতির কারণে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশবাসীকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে উত্তর ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যাতায়াত না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক এই পাল্টা অভিযানে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিষয়টি গভীর নজরদারিতে রেখেছে এবং দুই প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছে।