ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী ইসরাইলের দখলকৃত ভূখণ্ডে সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় তেলআবিবসহ বিভিন্ন শহরে সাইরেন বেজে ওঠে এবং বেনগুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। রোববার ইসরাইলি গণমাধ্যম ও ইরানী বার্তা সংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরাইলি টিভি চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি সামরিক বাহিনী প্রতিহত করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে হামলার কারণে বেনগুরিয়ন বিমানবন্দরের ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়। ইসরাইলের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ইয়েমেনি হামলার কারণে অধিকৃত আল-কুদসসহ ২০টিরও বেশি শহর ও বসতিতে সাইরেন বেজে উঠেছে।
ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি জানান, তাদের বাহিনী তেলআবিবের বেনগুরিয়ন বিমানবন্দর এবং একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। রোববার এক বিবৃতিতে ইয়েমেনি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ‘প্যালেস্টাইন-২’ নামে একটি সুপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বেনগুরিয়ন বিমানবন্দরে আঘাত হেনেছে।
ইয়েমেনের আল-মাসিরাহ টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলার ফলে বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। একইসঙ্গে, মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ‘হ্যারি ট্রুম্যান’ এবং লোহিত সাগরে থাকা অন্যান্য শত্রু সামরিক নৌযানগুলোতেও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়। ইয়েমেনি বাহিনীর মুখপাত্র আরও জানান, এই অভিযানে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয় এবং হামলা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে।
তেলআবিব ও অন্যান্য শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আল-জাজিরা জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেশ কয়েকটি শহর ও বসতিতে, বিশেষ করে তেলআবিব, আল-কুদস এবং উত্তরের বেশ কিছু এলাকায় সাইরেন বেজে ওঠে। আল-মাসিরাহ টিভি আরও জানায়, সাইরেন বেজে ওঠার পর অধিকৃত জাফার পালমাচিম বিমানঘাঁটিসহ কেন্দ্রীয় ফিলিস্তিনের বড় অংশে ইসরাইলি বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
একটি আরব সংবাদমাধ্যম ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর অধিকৃত অঞ্চলের বাসিন্দাদের পালিয়ে যাওয়ার ভিডিও সম্প্রচার করেছে। যেখানে দেখা যায়, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পরপরই লোকজন নিরাপত্তার সন্ধানে ছুটতে শুরু করেছে।
গত ১৮ মার্চ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নতুন করে হামলা শুরু করার জবাবে ইয়েমেনও তাদের সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করেছে। ইয়েমেন ইসরাইলকে গাজায় অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল, সেটি অমান্য করার পর তারা এই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়েমেন বলেছে, গাজার যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাবে।
অন্যদিকে, ইয়েমেনেও মার্কিন বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইয়েমেনের মতে, এটি ইসরাইলকে সমর্থন করার মার্কিন প্রচেষ্টার অংশ। ইয়েমেনের এই হামলা ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে। সূত্র: ইরনা ও মেহের নিউজ।