প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১২:১১
সৌদি আরব সরকার বিদেশি ব্যক্তি ও কোম্পানির জন্য সম্পত্তি কেনার সুযোগ করে দিতে নতুন একটি আইন পাস করেছে, যা কার্যকর হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে। ‘ভিশন ২০৩০’ এর অংশ হিসেবে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশটি বৈচিত্র্যময়, উদার ও বিনিয়োগবান্ধব অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হতে চায়। প্রথম ধাপে রিয়াদ ও জেদ্দা ছাড়াও আরও কিছু নির্ধারিত শহরে বিদেশিরা বাড়ি ও জমি কিনতে পারবেন। তবে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বিবেচনায় মক্কা ও মদিনায় সম্পত্তি কিনতে হলে বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
আইনটি বাস্তবায়নের পূর্বে ‘ইস্তিতা’ নামের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ১৮০ দিনের মধ্যে বিস্তারিত নিয়মনীতি ও অনুমোদিত এলাকার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের মতামত গ্রহণ করা হবে এবং ধাপে ধাপে পরিপূর্ণ আইনি কাঠামো নির্ধারণ করা হবে। বিদেশি ব্যক্তি, প্রবাসী ও আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবেন এবং সৌদি আরবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের নতুন বিনিয়োগ কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। বিশেষ করে রিয়াদ, জেদ্দা ও উচ্চাভিলাষী নিওম প্রজেক্ট এই সিদ্ধান্তের কারণে আন্তর্জাতিক ডেভেলপারদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারের উদ্দেশ্য হলো আবাসন খাতে সরবরাহ বাড়ানো, ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং অর্থনীতিকে বহুমুখীকরণ করা। পাশাপাশি দেশীয় নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষা করেও বিদেশি বিনিয়োগে উদারতা দেখানো হচ্ছে। এই উদ্যোগ সৌদি যুবসমাজের জন্যও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ‘ইস্তিতা’ প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত চোখ রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতের অনুমোদিত এলাকাগুলোর সম্ভাব্য প্রকল্পগুলোর ওপর নজর দিতে। যারা আগে থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের আবাসন ও বাণিজ্য খাতে আগ্রহী, তাদের জন্য সৌদি আরব হতে পারে পরবর্তী নিরাপদ গন্তব্য।
বিশ্বের অন্যান্য সফল মডেলের মধ্যে দুবাই, আবু ধাবি ও দোহার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সৌদি আরব এবার এক নতুন দিগন্তে পা রাখতে যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত দেশটির ভিশন ২০৩০-এর আওতায় বাস্তবায়নযোগ্য এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সৌদি সরকার আশা করছে, এই উদ্যোগ শুধু দেশীয় অর্থনীতি নয়, বরং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের একটি নতুন যুগের সূচনা করবে এবং দেশটিকে ভবিষ্যতের গ্লোবাল হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।