রাবিতে আন্টিবায়েটিক সচেতনতামূলক গোলটেবিল বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ২৪শে নভেম্বর ২০১৯ ০৮:২২ অপরাহ্ন
রাবিতে আন্টিবায়েটিক সচেতনতামূলক গোলটেবিল বৈঠক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাওয়ারনেস উইক’ উদযাপিত হয়েছে। সপ্তাহব্যাপী এই উৎসবের শেষ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের আয়োজনে সচেতনামূলক গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাবহারে সচেতনতা বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, এন্টিবায়োটিক সেবনের ফলে রোগ সেরে যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু ভেতরে জার্মটা থেকে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি কিন্তু স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছে না। অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ক্ষেত্রে আমাদের মাঝে সচেতনতা না থাকে তাহলে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

তারা বলেন, অনেক সময় ব্লাড টেস্ট করাতে অনেক সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে অনেকে এন্টিবায়েটিক ব্যবহার করে। এই দীর্ঘসূত্রিতা কমানো গেলে এন্টিবায়োটিক এর ব্যবহার কমানো সম্ভব। ভাইরাস জ¦র এমনিতে পাঁচ-ছয় দিন পর ভালো হয়ে যায়। আমরা সামান্য এ জ¦রের জন্য এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেই না। কিন্তু তারা যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বাইরে থেকে কিনে ব্যবহার করে তাহলে কিছু করার থাকে না। এক্ষেত্রে ঔষধ কোম্পানিগুলো সচেতন হলে এর ব্যবহার রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন আলোচকরা।

বক্তারা বলেন, এছাড়া মানুষের মাঝে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এর ব্যবহার রোধ করা যেতে পারে। কোনটা এন্টিবায়োটিক তা মানুষকে চেনাতে হবে। এর জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের গায়ে রং অথবা কোন ধরণের চিহ্ন দেয়া যেতে পারে। এন্টিবায়োটিক এর ভয়াবহতা বুঝাতে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার বাড়াতে হবে। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যাতে কোন ফার্মেসী এন্টিবায়োটিক ঔষধ বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে। যারা করবে তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। অনেক সময় রুগী ডোস সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে করে ভাইরাসের জীবানুর শক্তি কয়েকগুন বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ফুল ডোস বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

আমাদের দেশে একটি সফল প্রোগ্রাম হলো টিকাদান কর্মসূচি। সেটা একদিনে সফল হয়নি। সফলতার জন্য ৬ বছর সময় লেগেছে। আমরা যদি এর সফলতার পেছনের কারণগুলো অনুসরণ করতে পারি তাহলে সফল হওয়া সম্ভব। এছাড়া সামাজিক প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজে বিভিন্ন সেমিসারের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে তাহলে এর ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

ফার্মেসী বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আশিক মোসাদ্দিকের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক একরামুল ইসলাম, মো. আব্দুল আলীম আল বারী, সহযোগী অধ্যাপক তাহমিতা শারমিন, আজিজুর রহমান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মাইক্রবায়োলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. ফয়সল আলম, স্কয়ারের ম্যানেজার কোয়ালিটি অ্যাসিউনেন্স পাবনা ইউনিটের মো. আব্দুর রাজ্জাক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল আমিন, মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জহরুল হক, লেবিড ফার্মা গ্রুপের এরিয়া ম্যানেজার সোহেল রানা প্রমুখ।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব