প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৩, ১:৩
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের ৩৮ নং নিয়ামতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সময়মতো বিদ্যালয়ে না আসা, দপ্তরী দিয়ে ক্লাস নেওয়া ও উন্নয়নমূলক কাজের বাজেটের টাকা উত্তোলন করে কিছু কাজ করে বাকি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও অভিভাবকগণের ।
অভিভাবক ও স্থানীয়রা বলেন, আগের যে প্রধান শিক্ষক ছিল সে সময়মতো স্কুলে আসতো এবং স্কুলে বাচ্চাদের ভালো করে ক্লাস নেওয়া হতো। শিউলী আপা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পরে তিনি স্কুলে আসেন ১০/১১ টায়। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পরে ছাত্রছাত্রীদের তেমন লেখাপড়া হয়না। আগের থেকে শিক্ষার মান কমে গেছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদ জানান, আমাদের প্রধান শিক্ষক শিউলি আপা ১০/১১ টার সময় স্কুল আসে।
দপ্তরী দিয়ে ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সে বলে আমাদের বিদ্যালয়ের দপ্তরী আশরাফুল আমাদের ইসলাম শিক্ষা ক্লাস নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই জন শিক্ষার্থী জানান, আপা দেরীতে স্কুলে আসে। আমাদের স্কুলের পিয়ন আমাদের ক্লাস নেই। আমাদের আগের মত আর পড়ানো হয়না।
বিদ্যালয়ের সভাপতি সাদেকুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিউলী আক্তারের বিরুদ্ধে ১০/১১টায় স্কুলে আসা ও লেখাপড়ার মান ভালো হয়না বলে আমাদের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকগণ আমাকে অভিযোগ দেন। আমি এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে জানতে চাইলে, তিনি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং আমাকে বলেন তাহলে আজ থেকে আপনি ক্লাস নেন।
তিনি আরও বলেন, আমি অভিযোগ পাওয়ার পরে স্কুলে আসে কয়েকদিন দেখি তিনি ১১ টার পরে স্কুলে প্রবেশ করছেন। তিনি এত দেরীতে কেন স্কুলে আসছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন আপনি কি আমাক বারো বিঘা (স্কুলের পার্শ্বের একটা জায়গার নাম) পাহারা করছেন আমি কখন স্কুলে আসি আর কি করি।
সভাপতি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজের টাকা উত্তোলন করে কি কি খরচ করছেন এ বিষয়ে ভাউচারের ফটোকপি চাইলে তিনি বলেন, আমি ভাউচারের ফটোকপি দিতে পারবোনা। আপনি আসে দেখে যান। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়ের কোন উন্নয়নমূলক কাজ করেননি। আগে যা ছিল এখনও তাই আছে।
লেখাপড়ার মান সম্পর্কে বিদ্যালয়ের সভাপতি সাদেকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের যে প্রধান শিক্ষক ছিল তার সময় লেখাপড়ার মান ভালো ছিল। এখন লেখাপড়ার মান ভালো নেই। দপ্তরী আশরাফুলকে দিয়ে ক্লাস নেওয়ায়। ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ে আসেনা। বিদ্যালয়ে এখন মোট ছাত্রছাত্রী প্রায় ১২০ জনের মত হবে। শিক্ষার মান ভালো না হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি করাচ্ছে। আমি এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছি। বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলছে, পরীক্ষা শেষ হলে আমি ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবক মিটিং ডেকে তারপর শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিব।
অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিউলী আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা বলবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অতুল চন্দ্র রায় এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ঐ বিদ্যালয়ের সভাপতি আমাকে অভিযোগ দিয়েছেন। আমি ঐ ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, দপ্তরী ক্লাস নিতে পারবেনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।