প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১৬:২১
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩১ জনের প্রাণহানি ও দেড় শতাধিক আহতের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে শত শত শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা হয়ে এক নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেন। তাদের উপস্থিতিতে সচিবালয়ের মূল গেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভের কারণে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত যান চলাচল ব্যাহত হয়।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলো গভীর রাতে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েও। দুর্ঘটনার মাত্র একদিন পরেই এইচএসসি ও সমমানের কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষার সূচি থাকলেও তা বাতিলের ঘোষণা আসে পরীক্ষার ঠিক আগের রাতে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এই সিদ্ধান্ত দেরিতে আসায় বহু পরীক্ষার্থী বিভ্রান্ত হয়েছে এবং কেউ কেউ সকালেই কেন্দ্রে চলে যায়। তারা প্রশ্ন তুলেছে, দুর্ঘটনার পরপরই কেন এই ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
বিক্ষোভকারীরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দেন। তাদের হাতে ছিলো ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা ছিলো ‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’, ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’। এসবের মধ্য দিয়ে তারা স্পষ্ট করেন—এই আন্দোলন শুধুই আবেগ নয়, বরং ন্যায্য দাবির বহিঃপ্রকাশ।
শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন, যার মধ্যে রয়েছে নিহত ও আহতদের নাম-ঠিকানাসহ সঠিক তালিকা প্রকাশ, শিক্ষকদের অসদাচরণের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, ক্ষতিপূরণ প্রদান, ট্রমা ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট, জনবহুল এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান চালনার নিষেধাজ্ঞা এবং দায়ী কর্তৃপক্ষের শাস্তি।
সকাল থেকেই উত্তরা গোলচত্বরে শিক্ষার্থীদের জমায়েত শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে সচিবালয়ের দিকেও। এসময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার মাইলস্টোন ক্যাম্পাসে গেলে তারা শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। পরবর্তীতে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর তারা পুলিশের নিরাপত্তায় সেখান থেকে বের হন।
শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এসেছে। তারা বলছে, এই শোক যেন শুধু প্রথাগত বক্তব্যেই না থেকে যায়, বরং সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক—এটাই তাদের প্রত্যাশা।