প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১২:১
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই ৬ দফা দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা কলেজ গেটের সামনে জড়ো হয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে তারা দাবি তুলেছেন—সঠিকভাবে নিহতদের তালিকা প্রকাশ ও ন্যায়বিচারের। ‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’, ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’—এমন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে শিক্ষার্থীরা সড়কের ওপর বসে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। পুলিশ বারবার সরিয়ে দিতে চাইলেও তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এত বড় দুর্ঘটনার পর কেউ দায় নিচ্ছে না, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা গভীরভাবে হতাশাজনক। তারা বলেন, আমরা সহিংসতা চাই না, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতেই হয়েছে। তাদের দাবি, শুধু ক্ষোভ প্রকাশ নয়, সুনির্দিষ্ট ৬ দফা দাবিও প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, প্রথমত তারা চান দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করা হোক। দ্বিতীয়ত, আহতদের একটি নির্ভুল ও সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা জরুরি। তৃতীয়ত, দুর্ঘটনার সময় শিক্ষকদের সঙ্গে যারা দুর্ব্যবহার করেছেন, তাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। চতুর্থত, নিহত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পঞ্চমত, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিমান বাতিল করতে হবে। এবং ষষ্ঠত, সামগ্রিক প্রশিক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ীতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন কলেজ ভবনে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায় এবং মুহূর্তের মধ্যে ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। এতে ২৭ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী। আহত হন আরও অন্তত ৭৮ জন এবং তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা কলেজে এসে নিরাপত্তাহীনতায় পড়বে, তা কখনো ভাবেননি। তারা চান, এমন দুর্ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয় এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক।