আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ব্যাংকগুলোতে সুদের হার এক অঙ্ক (সিঙ্গেল ডিজিটে) কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তারা বলছে সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসতে হবে। যারা ভালো ঋণগ্রহিতা তাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করতে এ প্রচেষ্টা, তারা টাকা নিয়ে টাকা শোধ করেনি তাদের জন্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠেক শেষ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সিঙ্গেল ডিজিট ঠিক থাকবে। জানুয়ারি ১ তারিখ থেকেই হবে, এর মধ্যে আশা করি বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার ইস্যু করবে এবং ইস্যু করলেই সবাই তো রেডি, ইস্যু করলেই কাজ শুরু করতে পারবে। শুরু করলেই ফলাফল দেখতে পারবে।
জানুয়ারির ১ থেকেই সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকর হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে চেষ্টা করছি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে করতে হয়। আক্ষরিক অর্থে হবে… পরে দেখা যাবে ৭ দিন পর হলো। এর মাঝে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করবে এবং সবাই তো রেডি। এ লক্ষ্যে গত ১ ডিসেম্বর সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার কৌশল ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক রিপোর্ট তৈরি করেছে, সার্কুলার ইস্যু করেনি। তাদের একটি কমিটি করে দিয়েছিলাম, সেই কমিটি কাজ শেষ করেছে। ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার চেষ্টা করছি, সে কারণে তারা একটি প্রজ্ঞাপন ইস্যু করবেন। সে প্রজ্ঞাপনে সব কিছু থাকবে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও কাজ করতে হবে।
স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কয়েক দফা বসে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিটি যে সুপারিশ করেছে যেহেতু সেটা পাবলিক হয়নি, পাবলিক হলে জানতে পারবেন, গোপন রাখবো না কিছু। সারা বিশ্বে কোথাও এত হাই রেটে ইন্টারেস্ট নেই, সামঞ্জস্য করে চলতে হবে।
সুদের হার সবার জন্য এক হবে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২ শতাংশ দিয়ে যারা রেজিস্ট্রেশন করছে তাদের জন্য এক রকম আবার যারা ভালো তাদের জন্য আলাদা প্রক্রিয়া থাকবে। যারা ঋণখেলাপি তাদের বলা হতে পারে তোমরা অর্ধেক টাকা দিয়ে স্বাভাবিক হও। সরকারের আমানত ৪০ শতাংশ ব্যাংকগুলোতে দেবে বলে আগেই সিদ্ধান্ত রয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন এটা বাড়ানো হবে কিনা আবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গিয়ে দেখবো ৫০ শতাংশ করা যায় কিনা।
বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংকঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ ও আমানতের সুদের হার ৬ শতাংশে রাখতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী মহলের দাবি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একাধিকবার এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। গত অগাস্টে ঋণ ও আমানতের সুদহার যথাক্রমে ৯ ও ৬ শতাংশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে তাগাদা দেওয়া হলেও তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো এখন ছয় থেকে থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সুদে আমানত সংগ্রহ করছে এবং ঋণের শ্রেণিভেদে সাড়ে ৯ সাড়ে ২০ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।