প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১১:১১
আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেট নিয়ে ভাবনা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, আসন্ন বাজেট হবে বাস্তবমুখী ও জনকল্যাণমুখী। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা আসবে বাজেটে, তবে সচিবালয় ভাতা বা রেশন ভাতা সব একসঙ্গে দেওয়া সম্ভব নয়।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, সচিবালয়ের বাইরে কর্মরতদের ক্ষেত্রেও ভাতা নিয়ে সমতা রক্ষা জরুরি। সচিবালয় ভাতা দিলে বাইরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একই দাবি তুলবেন। তিনি বলেন, রেশন ভাতা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ও বিজিবির মতো বাহিনীগুলো পেয়ে আসছে, কারণ তাদের জীবনযাপন স্বাভাবিক নয়, ডিউটি অনিয়মিত, খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম অনির্ধারিত।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। তবে সব ভাতা একসঙ্গে চালু করতে গেলে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। বাজেট ঘোষণার আগে এখনও এক-দুই সপ্তাহ সময় আছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তখন জানানো হবে।
আইএমএফ-এর শর্তে ভর্তুকি কমানোর বিষয়ে তিনি বলেন, কৃষিতে ভর্তুকি কমানো হবে না, কারণ এটি কৃষকের ন্যায্য দামের জন্য প্রয়োজন। তবে এলএনজি, ডিজেল ও পেট্রোলের ক্ষেত্রে ভর্তুকি কমানো হবে পর্যায়ক্রমে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে ‘সিস্টেম লস’ কমাতে বলা হয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দও বাড়ানো হবে, বিশেষ করে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা কিছুটা বাড়বে। তবে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত না করার কারণে কিছু ভুয়া নাম তালিকায় রয়েছে, যাদের বাদ দিলে বাজেটের ব্যয় কমবে এবং প্রকৃতদের ভাতা বাড়ানো যাবে।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, আপাতত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দ কমানো হবে না, কারণ তালিকা থেকে নাম কাটা শুরু করলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এজন্য আপাতত বিদ্যমান সুবিধাভোগীরাই ভাতা পাবেন।
নির্বাচনি খরচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে বাজেট দেয়, সেটির ওপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ সীমিত। তবে বাজেটে নির্বাচনের জন্য কিছু বরাদ্দ রাখা হবে, কারণ এ সময় মাঠপর্যায়ে অতিরিক্ত খরচ হয়।
এই বাজেট বাস্তবের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা হলেও কিছু সীমাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে বলে মত অর্থ উপদেষ্টার। তবে সবদিক বিবেচনায় এটি হবে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট।