প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১৬:২
টেকনাফের তুলাতলী ঘাট এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আউটপোস্ট শাহপরী রাত আড়াইটায় একটি বিশেষ অভিযান চালায়। সেই সময় একটি সন্দেহজনক ইঞ্জিনচালিত কাঠের বোটকে থামার সংকেত দিলে পাচারকারীরা উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে পালাতে চেষ্টা করে।
আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে উভয়পক্ষের অনির্দিষ্টসংখ্যক গুলির লড়াই শুরু হয়। এই গোলাগুলিতে একজন পাচারকারী আব্দুল শক্কুর (৪০) গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় তাকে কোস্ট গার্ড কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশির পর পাচারকারী বোটটি থামিয়ে তল্লাশি চালানো হলে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি ৯ মিমি পিস্তল, চার রাউন্ড তাজা গোলা এবং ৩০ হাজার পিস ইয়াবা। এ ঘটনায় মোঃ ইলিয়াস (৩০), নূর মোহাম্মদ (৬১) এবং আব্দুল শক্কুরকে (৪০) আটক করা হয়।
আটক তিনজনেই উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। ৪ জন পাচারকারী সাগরে লাফ দিয়ে পালিয়ে গেলে তাদের ধরতে পারেনি কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। ধৃত ও আলামত জব্দের পর দ্রুত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টা টহল কার্যক্রমে মাদক চক্রের কর্মকাণ্ড অনেকাংশে প্রশমিত হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ জোরদারে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, টেকনাফ উপকূল দিয়ে মাদকপাচার একটি সংগঠিত চক্রের অংশ। ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে ইলিয়েন্টাসহ অন্যান্য নিত্যনতুন পথে ইয়াবা পৌঁছে দেওয়া হয়। নদীগর্ভ দিয়ে এই অবৈধ পণ্য বাংলাদেশে ঢুকে জনজীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে।
সরকারি সূত্র মতে, কোস্ট গার্ডের এই ধরনের সাঁজোয়া অভিযান মাদকদ্রব্য ঢুকতে নিরুৎসাহিত করছে এবং পাচারকারীদের দমনে সহায়ক হচ্ছে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে, স্থানীয় জনগণ যদি সন্দেহভাজন নৌকা বা ব্যক্তির গমনাগমন দেখে, দ্রুত কোস্ট গার্ড বা নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে তথ্য জানাতে। এভাবেই মাদক পাচার চক্রের বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে এবং উপকূলীয় নিরাপত্তা আরও দৃঢ় হবে।