প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ২১:১৬
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এক সংবাদ সম্মেলনে পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, পায়রা বন্দরকে টেকসই করতে হলে এর নিজস্ব ড্রেজার থাকা আবশ্যক এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। তার মতে, একটি পোর্ট গড়ে উঠতে ২০ থেকে ২৫ বছর সময় লাগে এবং পায়রা বন্দরের উন্নয়নেও সেই ধৈর্য দরকার।
তিনি জানান, পায়রা বন্দর দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে গড়ে উঠেছে যার ভৌগোলিক অবস্থান, প্রশস্ত চ্যানেল ও সরল যোগাযোগ ব্যবস্থা একে অন্যরকম সুবিধা দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের জন্য এই বন্দর একটি অর্থনৈতিক করিডোরে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৩% আমদানি-রপ্তানি চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে, তবে আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ এই হার দ্বিগুণ হতে পারে।
পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে তা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, দেশে যখনই নতুন বন্দর নির্মাণের কথা ওঠে তখন অনেকেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখান, অথচ উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের সময়োপযোগী ও টেকসই পদক্ষেপ নিতে হবে। বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনাই একমাত্র পথ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল, বুয়েটের টিম লিডার অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহম্মেদ এবং ডাচ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভির প্রতিনিধি মেনো মুইজ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বুয়েট ও রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভির সঙ্গে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি চুক্তি করে। ছয় বছর পর সেই মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করা হয় যেখানে ১৯টি মূল উপাদান নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে বন্দরের সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, ঢেউ প্রবাহ, নাব্যতা, ড্রেজিং এবং ইউটিলিটি সংযোগ। এসব উপাদান বাস্তবায়নের মাধ্যমে পায়রা বন্দর দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির নতুন দুয়ার খুলে দিতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।এই সংবাদ সম্মেলনে সরকারি, সামরিক ও বেসামরিক প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী সমাজের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।