প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১৮:৪১
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ছদুরখীল এলাকার মাদরাসা ছাত্র মো. সোহেল (১৪) অপহরণের ১২ দিন পর অর্ধগলিত, বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। সোহেলের পরিবারের দায়েরকৃত মামলার ৫ আসামীর মধ্যে ৩ জনকে আগে পুলিশ আটক করলেও মূল পরিকল্পনাকারী মংসানু মারমাসহ অপরাধীদের সন্ধান মেলেনি। গত ১৯ জুলাই সকাল গহীন অরণ্যে অভিযান চালিয়ে মংসানু মারমাসহ ৭ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। মংসানু মারমা পূর্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত, ২০২১ সালে অস্ত্রসহ আটক হয়ে ২৩ মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েও পুনরায় সশস্ত্র কার্যক্রমে লিপ্ত ছিলেন।
সোহেল ৪ জুলাই রাতে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় এবং অপহরণকারীরা ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অভিযোগে বলা হয়, শনিবার সকালে সোহেলকে অপহরণকারী জাহেদের নেতৃত্বে ৫-৬ জন শিক্ষক জহরের বাড়িতে এসে টাকা দাবি করে এবং মব সৃষ্টি করে। পরবর্তী সময়ে যৌথবাহিনী অপহৃতের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে।
মানিকছড়ি থানা পুলিশ ও সিন্দুকছড়ি জোনের সেনাবাহিনী সক্রিয় তদন্ত ও অভিযানে মংসানু মারমা ও সহযোগীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ স্বীকার করেছে। এদিকে, সেনাবাহিনীর গুলিতে এক সশস্ত্র সন্ত্রাসী আহত হলেও গহীন জঙ্গলে পালিয়ে যায়। অভিযানে অস্ত্র, কার্তুজ, চাঁদাবাজির নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে।
মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল জানান, মাদক, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের মূল পরিকল্পনাকারী মংসানুসহ অপর আসামিদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং রোববার আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হবে। মংসানুর গ্রেফতারে জনপদে কিছুটা স্বস্তি নেমে এসেছে। তবে নিরাপত্তা বজায় রাখতে তল্লাশি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মাদরাসা ছাত্র সোহেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এলাকার জনজীবনে গভীর শোক ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তবে অভিযানে মূল পরিকল্পনাকারীর গ্রেফতারে জনগণের মধ্যে আশা দেখা দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমন করতে সহায়ক হবে। নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের সঙ্গতি এবং জনগণের সহযোগিতা অপরিহার্য বলে মনে করছে এলাকাবাসী।
জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠোর নজরদারি ও সহায়তা দিয়ে মানিকছড়ি অঞ্চলে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। সন্ত্রাস দমনের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।