প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ২০:২২
কুড়িগ্রামে এক গণসমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, আমরা একবার পিন্ডির গোলামি ছিঁড়ে ফেলেছিলাম, এখন আবার আমাদের দিল্লির দাসে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনের মাধ্যমে সেই শিকলও আমরা ভেঙে ফেলেছি, তবে নতুন করে যেন আমরা ওয়াশিংটনের দাসত্বে না পড়ি। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন একটি নতুন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, যা বাংলাদেশকে ওয়াশিংটনের প্রভাবাধীন করে তুলতে পারে, এবং তা প্রতিহত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৪৭ ও ১৯৭১ সালের বিজয় রক্ত দিয়ে অর্জিত হলেও সেসব বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এই সরকার মেগা প্রকল্পের নামে দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়েছে এবং একতরফাভাবে বিদেশি স্বার্থ রক্ষা করেছে। তিনি শেখ হাসিনাকে ‘লেডি ফেরাউন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তার জুলুম ও দমননীতি দেশের মানুষকে নিঃশেষ করে দিয়েছে।
আল্লামা মামুনুল হক আরও উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর এবং ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে ইসলামপ্রেমী জনতার ওপর গুলিবর্ষণসহ ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার আন্দোলনে রক্তপাতের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, কিভাবে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জনগণের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুড়িগ্রাম জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মুফতি ইব্রাহিম খলিল নোমানী এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মিসবাহুল ইসলাম সুজা। উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শারাফাত হোসাইন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা রেজাউল করিমসহ আরও অনেকে।
সমাবেশের শেষ দিকে মামুনুল হক ঘোষণা করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে কুড়িগ্রামের চারটি আসনে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে প্রার্থী দিচ্ছে দলটি। কুড়িগ্রাম-১ আসনে শহিদুল ইসলাম ফয়েজি, কুড়িগ্রাম-২ এ মুফতি নুরুদ্দীন কাশেমী, কুড়িগ্রাম-৩ এ মামুনুর রশীদ এবং কুড়িগ্রাম-৪ এ মুফতি শাহাদত হোসাইনের নাম ঘোষণা করেন তিনি।
খেলাফত মজলিসের এই শক্ত অবস্থান এবং নির্বাচনমুখী ঘোষণা এলাকাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
