প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৭
বান্দরবানের চিম্বুক সড়কে ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের পর বিদ্যুতায়িত হয়ে একই পরিবারের দুইজনসহ তিনজন ম্রো নারী প্রাণ হারিয়েছেন। সোমবার ১৪ জুলাই ভোরে জেলার ১৩ মাইল এলাকার রাংলাই হেডম্যান পাড়ায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন রেংথেন ম্রোর মেয়ে তুমলে ম্রো (১৭), পারাও ম্রোর স্ত্রী উরকান ম্রো (৭১) এবং মেরাও ম্রোর স্ত্রী রওলেং ম্রো (৩৫)।
স্থানীয় ও পুলিশের তথ্যমতে, পাড়াটির পাশে থাকা একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের সময় ছড়িয়ে পড়া তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই তারা বিদ্যুতায়িত হন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধারে এগিয়ে এলে একজনকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে বাকি দুইজনের মরদেহ তখনো ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল বলে জানানো হয়।
চিম্বুক সড়কের ১২ মাইল বাজার কমিটির সভাপতি রাংরাও ম্রো বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ঘটনাস্থলে তিন নারী মারা যাওয়ার ঘটনা স্থানীয়ভাবে সবাইকে নাড়া দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এত বড় দুর্ঘটনার পেছনে অব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি থাকতে পারে, যা তদন্ত করে দেখা উচিত।
এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, তারা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেন এবং একজনের মরদেহ হাসপাতালে পৌঁছায়। অপর দুইজনের মরদেহ উদ্ধারে পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
স্থানীয়দের দাবি, ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ লাইন ও সরঞ্জামের মান দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বারবার অভিযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। দুর্ঘটনার পরে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য রওনা দিয়েছেন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে নানা মহল থেকে।
এই দুর্ঘটনা পাহাড়ি অঞ্চলের নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে দুর্গম গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।