প্রকাশ: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:২৮
নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলায় চোর সন্দেহে এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। এই অমানবিক ঘটনা গত শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় ঘটে এবং এর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। নিহত ব্যক্তির নাম জহির উদ্দিন বেচু (৪০), তিনি উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের উত্তর লামছি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে কবিরহাটের ছবির পাইক গ্রামে ধুমচর ছমিরপাইক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এই ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ছবির পাইক গ্রামের হাবিব উল্লা (৪৫), অজিউল্লা লিটন (৪০), এবং সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের আবদুর রব খান সাহেব (৬৫)।
ভিডিওতে দেখা যায়, জহির উদ্দিন বেচুকে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে এবং সে কাতরাচ্ছে। এর মধ্যেও উপস্থিত লোকজন তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় জহির উদ্দিন বেচুকে চোর সন্দেহে আটক করে তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় এবং সকালে তার মৃত্যু ঘটে।
কবিরহাট থানার পুলিশ কর্মকর্তা মো. শাহীন মিয়া জানান, ঘটনার পর মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিও দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জহির উদ্দিন বেচু ২০২০ সাল থেকে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে আসছিলেন বলে জানান কবিরহাট উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান।
এ ঘটনার পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রবিবার নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এদিকে, স্থানীয় এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঘটনাটি ঘৃণাভরে গ্রহণ করছেন এবং এ ধরনের নৃশংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন।