রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় মায়ের বকুনিতে অভিমান করে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর আত্মহত্যার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। শান্তি নামের এই শিশুটি গত ২ মে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল এবং দীর্ঘ ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার ঢাকা মেডিকেলে মারা যায়।
ঘটনাটি ঘটে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতদিয়া গ্রামে। শান্তি শরিফ মন্ডলের মেয়ে ছিল। সেদিন সকালে সে তার ৫ বছর বয়সী ভাই শাহাদতের সাথে দুষ্টুমি করছিল। এতে রাগান্বিত হয়ে মা তাকে বকা দেন।
মায়ের বকুনিতে অভিমান করে শান্তি ঘরের ভেতরে চলে যায়। সেখানে সে ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ে। মা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করেন।
প্রথমে তাকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
চিকিৎসকরা জানান, দীর্ঘ সময় অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শান্তির অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। ১৬ মে বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে। মৃতদেহের পোস্টমর্টেম সম্পন্ন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শান্তি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে পরিবারের একমাত্র মেয়ে ছিল। এই ঘটনায় পুরো গ্রাম শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
মনোবিদরা বলছেন, কিশোর-কিশোরীদের সামান্য তিরস্কারেও গভীর মানসিক আঘাত লাগতে পারে। এ ধরনের ঘটনা এড়াতে অভিভাবকদের সন্তানদের সাথে স্নেহ ও বোঝাপড়ার সম্পর্ক বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।