মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার প্রায় ২ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৬ জন মানুষের প্রধান চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র হল ৩১ শয্যা বিশিষ্ট রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে দীর্ঘদিন ধরে এখানে চিকিৎসক, ওষুধ, সরঞ্জাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদ শূন্য থাকার কারণে সেবার মান মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। বর্তমানে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র দুইজন চিকিৎসক, ডা. গোলাম কিবরিয়া এবং ডা. অসীম কুমার বিশ্বাস, কর্মরত রয়েছেন। তাদের দ্বারা প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ রোগীর সেবা দেওয়া হয়, কিন্তু এসব রোগীদের পাশাপাশি অন্তঃবিভাগের ভর্তি রোগীদের সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই কারণে, বহু রোগীকে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকালটি (ডিএমএফ) ডিগ্রিপ্রাপ্তরা সেবা প্রদান করছেন।
এছাড়া, হাসপাতালের এক্স-রে, ইসিজি, আল্টাসনোগ্রামসহ অন্যান্য পরীক্ষার সরঞ্জাম না থাকায় এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসকের অভাবে সব ধরনের অপারেশনও বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে অপারেশন থিয়েটারে দীর্ঘদিন ধরে তালা ঝুলছে এবং মূল্যবান যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। সরেজমিনে হাসপাতাল পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, রোগীদের ভোগান্তির চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। টিকিট কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, এবং হাসপাতালের অভ্যন্তরে অসংখ্য অপ্রতিষ্ঠিত দৃশ্য চোখে পড়ে।
এছাড়া, গাইনী ও শিশু রোগের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসকও নেই, ফলে গর্ভবতী মা ও শিশু রোগীদের চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালের এক্স-রে, ইসিজি, আল্টাসনোগ্রাম, ইউরিন টেস্টসহ সব ধরণের টেস্টের সরঞ্জাম সংকট রয়েছে। রোগীদের জন্যও নিয়মিত ওষুধ পাওয়া যায় না এবং তাদের অনেককে বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক সময় ইমার্জেন্সি বিভাগেও রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয় না এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল বা সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কিছু চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবল সংকটের কারণে সেবার মান অব্যাহত রাখতে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন। তবে এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করা না হলে রোগীদের সেবা আরো অবনতি হতে পারে।