প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৫, ১৬:৩৪
ঝালকাঠির রাজাপুরে প্রকাশ্যে চলছে লটারির নামে জুয়ার টিকিট বিক্রি। ‘পিরোজপুর শিল্প ও বাণিজ্য মেলা–২০২৫’ শিরোনামে এই কার্যক্রম সীমান্ত পেরিয়ে এখন রাজাপুরের হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল এলাকার মতো জনবহুল স্থানে বিস্তৃত হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উচ্চস্বরে মাইকিং করে বলা হচ্ছে—“প্রবেশ টিকিট কিনুন, পুরস্কার জিতুন।” এই লোভনীয় প্রচারণায় পা দিচ্ছে কিশোর-কিশোরী, শিক্ষার্থী, গৃহিণী ও সাধারণ মানুষ। টিকিট প্রতি দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা হলেও পুরস্কারের আশায় কেউ কেউ দিনে কিনছেন একাধিক টিকিট।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এটি মূলত একটি জুয়ার ফাঁদ। লটারির নামে টিকিট বিক্রি হলেও এর কার্যক্রম পুরোপুরি জুয়া আইনের আওতায় পড়ে। ফলে এই কার্যক্রম শুধু বেআইনিই নয়, সামাজিক ও নৈতিক দিক থেকেও মারাত্মক ক্ষতিকর।
বিশেষ করে কিশোর ও শিক্ষার্থীরা এই ‘লটারির’ প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র টাকার বিনিময়ে লাখ টাকার পুরস্কারের আশায় তারা ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটাচ্ছে এসব টিকিট কিনে। এতে পড়ালেখা থেকে মনোযোগ সরছে এবং মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক চাপও বাড়ছে পরিবারগুলোর ওপর।
রাজাপুরের অনেকেই বলছেন, প্রশাসনের চোখের সামনে এতকিছু ঘটলেও তারা নীরব ভূমিকা পালন করছে। শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছে স্থানীয় প্রশাসন, কিন্তু বাস্তব মাঠে নেই কোনো পদক্ষেপ।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ্র জানিয়েছেন, “এই লটারির টিকিট রাজাপুরে বিক্রির কোনো অনুমতি নেই। পিরোজপুরের মেলার টিকিট এখানে বিক্রি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে তার এই বক্তব্য স্থানীয়দের সন্তুষ্ট করতে পারেনি।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয়ভাবে এই কার্যক্রম চালাতে কিছু অসাধু চক্রের পৃষ্ঠপোষকতাও রয়েছে। ফলে দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে লটারি বিক্রেতারা।
এ অবস্থায় এলাকাবাসী দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা চেয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাদের দাবি, শুধু কথার আশ্বাস নয়, এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে হোক দৃশ্যমান কঠোর পদক্ষেপ।