চুরি হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি সহায়তা চাইলেন- প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ২২শে জানুয়ারী ২০২৫ ১০:০৯ অপরাহ্ন
চুরি হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি সহায়তা চাইলেন- প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

দেশ থেকে চুরি হয়ে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা উদ্ধার করতে বিদেশি বন্ধুদের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিগত সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শাসনামলে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করেছে। 


ড. ইউনূস জার্মানির ফেডারেল চ্যান্সেলারির প্রধান ভোল্ফগ্যাং স্মিড, বেলজিয়ামের রাজা কিং ফিলিপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এবং সুইস কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিসের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতার অনুরোধ জানান। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে এবং এ কাজে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। 


বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, নতুন বাংলাদেশের কথা বলতে গেলে এটি পরিচ্ছন্ন ও স্বচ্ছ হতে হবে। তিনি জার্মান মন্ত্রীকে জানান, জার্মানি আগামী এপ্রিলে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল পাঠাতে আগ্রহী। এ সময় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে নেপালের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা নিয়ে একটি আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। 


সুইস কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস জলবায়ু অর্থায়ন এবং সুন্দরবনে কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সহযোগিতা চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে। তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। 


থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুদেশের তরুণদের সংযোগ বাড়াতে তারা আগ্রহী। এপ্রিলে ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 


বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ এবং কঙ্গোর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে কঙ্গোর বন রক্ষা ও ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির সফলতা নিয়ে আলোচনা হয়। ড. ইউনূস বলেন, সংঘাতপ্রবণ এলাকায় ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি বড় ভূমিকা রাখতে পারে। 


লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সচিব লামিয়া মোরশেদসহ প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন। তারা জার্মান মন্ত্রীকে জানান, সরকার ইতিমধ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে এবং শীর্ষ ২০ অর্থপাচারকারীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালাচ্ছে। 


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, অর্থ ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সম্মিলিত সহযোগিতা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশ তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।