টিউলিপ সিদ্দিক ও পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার: ১২ দেশে তদন্ত চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:১৫ অপরাহ্ন
টিউলিপ সিদ্দিক ও পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার: ১২ দেশে তদন্ত চলছে

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে অন্তত ১২টি দেশে তদন্ত চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রে প্রকাশিত ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ এবং বিদেশে সম্পত্তি কেনার অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 


দুদকের মুখপাত্র দ্য টাইমসকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, শুধু যুক্তরাজ্য নয়, অন্যান্য দেশেও অর্থ পাচার করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পারস্পরিক আইনি সহায়তা চেয়ে তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহের জন্য অনুরোধ পাঠানো হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে ১০ থেকে ১২টি দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তবে টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে কতগুলো দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। মুখপাত্র আরও জানান, বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশের সহায়তার আশ্বাস পাওয়া গেছে। 


ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) কর্মকর্তারা জানুয়ারির শেষ দিকে ঢাকায় এসে দুদকের তদন্তে সহায়তা করেছেন। টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার নাম দুদকের তিনটি তদন্তে এসেছে। একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে লাভবান হওয়া, পরিবারের সদস্যদের জন্য জমি বরাদ্দে প্রভাবিত করা এবং অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্ত চলছে। টিউলিপ সবসময় এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তার একজন মুখপাত্র বলেন, এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই এবং টিউলিপ সিদ্দিকের সাথে কেউ যোগাযোগ করেনি। 


জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর পর টিউলিপের পরিবারের বাংলাদেশের রাজনীতির সাথে যোগসূত্রের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। এরপরেই তাকে মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়। প্রথমে টিউলিপ দাবি করেছিলেন, লন্ডনের কিংস ক্রসে অবস্থিত সাড়ে ছয় লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট তার বাবা-মা তাকে উপহার দিয়েছেন। তবে পরে জানা যায়, ফ্ল্যাটটি কিনেছেন আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ডেভেলপার আবদুল মোতালিফ। 


ডিসেম্বরে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উল্লেখ করে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে। দুদক ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও প্রয়োজনে সময় বাড়ানো হতে পারে। দুদকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ হলে বাংলাদেশ সরকার সিদ্দিককে দেশে প্রত্যর্পণের জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে। এই তদন্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সরকারের তৎপরতা জোরদার হয়েছে।