সিলেটে ৫ কোটি টাকার ফুটওভার ব্রিজ পরিত্যক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, সিলেট
প্রকাশিত: বুধবার ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:৫১ অপরাহ্ন
সিলেটে ৫ কোটি টাকার ফুটওভার ব্রিজ পরিত্যক্ত

সিলেট নগরীতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চারটি ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না হওয়ায় অব্যবস্থাপনা ও জনসাধারণের অনাগ্রহের কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পথচারীরা এগুলো ব্যবহার না করায় ব্রিজগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা, টোকাই এবং ছিনতাইকারীরা।


সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) জানিয়েছে, বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট, টিলাগড়, কদমতলী এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) গেটে নির্মিত এই ফুটওভার ব্রিজগুলোর ব্যয় প্রায় ৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তবে পথচারীদের ব্যবহার না থাকায় এই প্রকল্প এখন অর্থের অপচয় বলে সমালোচিত হচ্ছে।


সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, প্রথম ফুটওভার ব্রিজটি ২০১৬ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আগ্রহে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। পরে আরও তিনটি ব্রিজ তৈরি করতে ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয় হয়।


তবে জনসাধারণের অনাগ্রহের কারণে এই ব্রিজগুলো এখন নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি ও পথচারী ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে পথচারীরা সরাসরি রাস্তাই ব্যবহার করছেন।


সিসিকের শিক্ষা উপদেষ্টা অনিল কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, জনসচেতনতার অভাব এবং প্রকৌশলগত কিছু সমস্যার কারণে এগুলো ব্যবহার হচ্ছে না।


🔹 বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের জন্য সুবিধাজনক গঠনপদ্ধতি রাখা হয়নি।

🔹 ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পার হতে সময় বেশি লাগে, তাই মানুষ নিচ দিয়ে পার হয়।

🔹 নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় ছিনতাইকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে।

🔹 ব্রিজের নিচে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখল, যা পথচারীদের বিকল্প পথ ব্যবহার করতে বাধ্য করছে।


সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে বাধ্য করা হতে পারে। এছাড়া রাস্তা দিয়ে সরাসরি পারাপার নিষিদ্ধ করে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করলে জনসাধারণ ব্রিজ ব্যবহার করতে বাধ্য হবেন।


একজন পথচারী মন্তব্য করেন, "এই ব্রিজগুলোর প্রয়োজনই নেই। এগুলো শুধুমাত্র হর্তাকর্তাদের পকেট ভারি করার প্রকল্প।"


সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, চারটি ফুটওভার ব্রিজের মধ্যে একটিও কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন কোনো অবকাঠামো তৈরির আগে তার কার্যকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই করা উচিত।