ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আলোচিত ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম মাসুদ (এস আলম) ও তার পরিবারের মালিকানাধীন ৪২টি কোম্পানির ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিদেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের তদন্ত চলাকালীন তাদের ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ারের মালিকানার তথ্য পাওয়া যায়।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা এই বিপুল পরিমাণ শেয়ার হস্তান্তরের চেষ্টা করছিলেন। শেয়ার হস্তান্তর হলে মামলার কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় শেয়ারগুলো অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া, এসব শেয়ার থেকে অর্জিত মুনাফা ও অন্যান্য আয়ের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি একই কারণে এস আলম ও তার পরিবারের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যাংক খাতের অনিয়ম, কর ফাঁকি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণের নামে বের করে বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ইতোমধ্যে এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে এবং তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনারশিপ) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে শেয়ার লেনদেনও স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন ব্যাংকের শেয়ার সরকারের মালিকানায় নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৯ আগস্ট এনবিআর যৌথমূলধনী কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদফতরকে চিঠি দিয়ে এস আলমসহ সাত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মালিকানা হস্তান্তর স্থগিতের অনুরোধ জানায়।
৩১ আগস্ট পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট জানায়, এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাদের দুই ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থা এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।