বাবার সেবা করার দাবি জানিয়ে সন্তানের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৩১শে মে ২০২২ ০৭:২৭ অপরাহ্ন
বাবার সেবা করার দাবি জানিয়ে সন্তানের সংবাদ সম্মেলন

বাবার সাথে দেখা করা, তার চিকিৎসাসহ তার সেবা করার দাবি জানিয়ে সন্তান সংবাদ সম্মেলন করেছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন বরিশালের মুলাদী উপজেলার বানীমর্দন এলাকার আব্দুল হক হাওলাদারের ছেলে মোঃ নাসির উদ্দিন।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি চাকুরীর সুবাদে ১৯৮৫ সাল থেকে ঢাকায় কর্মরত রয়েছি। আমি ঢাকায় থেকে পরিবার পরিজনদের বিভিন্ন সময় সাহায্য সহযোগিতা করে আসছি। আমার মা-বাবা ছোট ভাই জাকির ও বড় বোন হাসিনা বেগমসহ এদের সবার দায়িত্ব ও ভরনপোষণ আমি বহন করেছি। এমনকি বড় বোনের স্বামী মারা যাওয়ার পরে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সকল দায়িত্ব আমি নিজ কাধে নিয়েছি। ছোট ভাই জাকিরের পড়াশুনাসহ তার যাবতীয় খরচ বহন করেছি। আমার বাবা আবদুল হক হাওলাদার গ্রামে থাকা অবস্থায় বাড়ি ঘর জমি জমা দেখাশুনা করতো। আমার পিতা একজন সহজ সরল ব্যক্তি হওয়ায় তিনি কোনো প্যাচগোচ বুঝতেন না।


তিনি বলেন, ২০১৮ সালের প্রথম দিকে এক পর্যায়ে আমার বাবা হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তাকে নিয়ে চিকিৎসকের স্মরনাপন্য হলেও কোন শারিরীক উন্নতি হয়নি বরং বিভিন্ন সময় অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। এরপরে পরিবার সহ অন্যান্যদের পরামর্শে তাকে মানসিক রোগের চিকিৎসককে দেখাই। চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরে, চিকিৎসক জানায় মানসিক রোগে আক্রান্ত তিনি। তার মানসিক চিকিৎসা করাতে হবে। তারপর থেকে আমি ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে আমার বাবার চিকিৎসা করাতে থাকি।


তিনি বলেন, ২০২০ সালে ১১ মে আমার মা মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর কয়েকমাস পরে বাবা আবদুল হক হাওলাদারকে  আমার ছোট ভাই জাকির হোসেন তার কাছে কিছুদিন রাখার কথা বলে নিয়ে যায়। সেসময় বাবার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধও দিয়ে দেই।


এরপর বাবাকে মাঝেমধ্যে ছোট ভাইয়ের বাসায় গিয়ে দেখে  আসতাম। তারপর বাবাকে আমার বাসায় নিয়ে আসার কথা বললে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাধ সাধেন। কয়েক দিন পর পুনরায় আমি ও আমার স্ত্রী সন্তানসহ বাবা আবদুল হক হাওলাদারকে আনতে ছোটভাইয়ের বাসায় যাই। এ সময় ছোটভাই ও তার স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটি হয় আামাদের। পরে আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর ভাইয়েরা আমাদের মারধর করলে শাহ আলী থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। বর্তমানে আমার ছোট ভাই জাকির হোসেনের স্ত্রীর ভাইয়েরা বাবার সাথে দেখা করতে দিচ্ছে না। আমাকে ও পরিবারকে বিভিন্ন সময় মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছেন।


তিনি বলেন, আমার বাবা একজন মানসিক অপ্রকৃতিস্থ ১০৮ বছরের বয়সী বৃদ্ধ লোক। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। আমার ভাই তাকে চিকিৎসা না করিয়ে ঘরে আটকে রেখেছে। বর্তমানে তিনি বিনা চিকিৎসায় পরে আছেন। সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমের সূত্রে ধরে জানতে পারি আমার বাবার সম্পত্তি আমার ছোট ভাইয়ের নামে লিখে দিয়েছেন।আমার প্রশ্ন একজন বিকার মানসিক ভারসাম্যহীন ১০৮ বছর বয়সী ব্যক্তি কিভাবে সম্পত্তি লিখে দেয়।


নাসির উদ্দিন বলেন, আমি আমার বাবার সঙ্গে দেখা করতে চাই এবং তাকে মানসিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে অন্যান্য চিকিৎসা করাতে চাই এবং তাকে আমাদের কাছে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাখতে ও সেবা করতে চাই। আমার বাবা একজন অসুস্থ্য মানুষ সে যেন স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারে তার ব্যবস্থা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা করে দিবেন।