প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৩০
শুক্রবার ইসলাম ধর্মে একটি অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন দিন। পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসে এই দিনের বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। এই দিনে জুমার নামাজ, দরুদ পাঠ, গোসল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে যেমন এই দিনে কিছু আমল করতেন, তেমনি তিনি তাঁর উম্মতদেরও তা অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রথমত, এই দিনে পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল করা এবং পরিষ্কার কাপড় পরা সুন্নাত। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত মুসলিমের উচিত প্রতি শুক্রবার গোসল করা, মিসওয়াক করা এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করা।” (সহিহ মুসলিম)
দ্বিতীয়ত, শুক্রবার সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত নূর বিচ্ছুরিত হবে এবং তা পরবর্তী জুমা পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে।” (আল-মুস্তাদরাক)
তৃতীয়ত, এই দিন দরুদ শরিফ পড়া ও বেশি বেশি জিকির-আসকারে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি করে দরুদ পাঠ করো, কেননা সেই দিন আমার কাছে তোমাদের দরুদ পেশ করা হয়।” (সুনানে আবু দাউদ)
চতুর্থত, জুমার নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরআনে বলা হয়েছে, “হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আহ্বান দেয়া হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো।” (সূরা জুমু’আ: ৯)
পঞ্চমত, শুক্রবারে এমন একটি মুহূর্ত থাকে যখন বান্দার দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন, “জুমার দিন একটি বিশেষ সময় আছে, সে সময়ে কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা কবুল করেন।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
ষষ্ঠত, এই দিনে পরিবারের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানো এবং গরিব-দুঃখীদের প্রতি সদয় হওয়াও ইসলামের শিক্ষা। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসাফাহা, হাসিমুখে কথা বলা ও মানুষকে উপকারে আসাকে ঈমানের অঙ্গ বলে বর্ণনা করেছেন।
সপ্তমত, জুমার দিন দুনিয়াবি কাজকর্ম থামিয়ে কিছু সময় কোরআন পাঠ ও ইবাদতে মগ্ন হওয়া বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। এটি শুধু নেকি অর্জনের সুযোগই নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি লাভের মাধ্যম।
অষ্টমত, জুমার দিন আল্লাহর রহমত, বরকত ও মাগফিরাত লাভের বিশেষ সুযোগ। এদিন গুনাহ মাফ, জান্নাতের আশাবাদ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির প্রার্থনা করার আদর্শ সময়। এই দিনকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগানো প্রতিটি মুসলিমের কর্তব্য।