প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ২০:৩৯
দেশে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেও গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গির উপর জোর দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। শনিবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, অনেকেই এখনো শুধু ভাঙার কাজে ব্যস্ত, অথচ সময় এখন গড়ার। পুরোনো বন্দোবস্ত মচকে গেছে, তাই এটিকে ভাঙতে গেলে আরও বেঁকে যাবে। এখন আমাদের কাজ হওয়া উচিত, নতুন বন্দোবস্তকে দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করানো। তিনি লিখেন, আবার সময় আসবে যখন ভাঙা যাবে, কিন্তু এক্ষণে গড়ার ওপর মনোনিবেশ করাটাই হবে দেশের জন্য কল্যাণকর।
মাহফুজ আলম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা নৈতিকভাবে উচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছিলাম। সেই অবস্থান ধরে রাখা জরুরি, যাতে ফ্যাসিবাদী অতীত আমাদের বর্তমানকে আচ্ছন্ন করতে না পারে। তিনি সতর্ক করে বলেন, আমরা যেন কোনোভাবেই মানবিক মর্যাদা, সুবিচার ও বৈষম্যহীনতার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে না যাই।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, গোপালগঞ্জের বহু হিন্দু জনগোষ্ঠী অতীতে লীগ সরকারের আমলে নিপীড়নের শিকার হয়েছে। সেসব বঞ্চিত মানুষের সঙ্গে মৈত্রী গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে কোনো এলাকা বা জনগোষ্ঠীকে ‘ঘেটো’ হিসেবে চিহ্নিত বা আলাদা করার বিরোধিতা করেন।
মাহফুজ বলেন, নাগরিক হিসাবে আমাদের উচিত মানবাধিকারের পক্ষে থাকা এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে প্রশাসনকে সহযোগিতা করা। এতে করে নতুন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা অনেকটাই অপ্রস্তুত ছিলাম। বিহ্বলতা আর অনভিজ্ঞতার কারণে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পুরোপুরি বিলোপ ঘটানো সম্ভব হয়নি। তবে এখন যদি রাজনৈতিক শক্তিগুলো নিজেদের সুশৃঙ্খলভাবে সাজাতে পারে এবং জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়তে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে সঠিক পথেই এগোনো যাবে।
এই উপদেষ্টার বার্তা থেকে স্পষ্ট, এখন আর ধ্বংস নয়, বরং দেশে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি, গণতন্ত্র এবং ন্যায়ের পথ তৈরি করাই সময়ের দাবি। এটাই হতে পারে রাজনৈতিক ঐক্য এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের মূল ভিত্তি।