প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১১:২৪
ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, কিয়ামতের বড় নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দাজ্জালের আগমন। হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, দাজ্জাল এক প্রতারক, যে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। তিনি ৪০ দিন পৃথিবীতে অবস্থান করবে, যেখানে প্রথম দিনটি হবে এক বছরের সমান, দ্বিতীয় দিন এক মাসের এবং তৃতীয় দিন এক সপ্তাহের সমান। বাকিগুলো হবে স্বাভাবিক দিনের মতো।
দাজ্জাল এমন ক্ষমতার অধিকারী হবে যে সে আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাতে পারবে, শুষ্ক ভূমিকে সবুজে রূপান্তর করতে পারবে, এমনকি মৃত ব্যক্তিকেও জীবিত করে দেখাবে বলে দাবি করবে। কিন্তু এসব হবে জাদু ও প্রতারণার অংশ, যার মাধ্যমে সে মুমিনদের ঈমান নষ্ট করতে চাইবে। এজন্য রাসূল (সা.) তার উম্মতকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ রাখার তাগিদ দিয়েছেন।
দাজ্জালের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে এমন অঞ্চল হলো সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী এলাকা। তার চেহারার একচোখ অন্ধ থাকবে এবং তার কপালে 'কাফির' শব্দ লেখা থাকবে যা শুধু মুমিনদের চোখে স্পষ্ট হবে। যেসব মুমিনদের ঈমান দৃঢ় থাকবে, তারাই দাজ্জালের ফাঁদ থেকে নিরাপদ থাকবে। বিশেষ করে যারা নামাজ আদায় করে, কোরআন তিলাওয়াত করে এবং রাসূলের (সা.) সুন্নাহ অনুসরণ করে জীবন যাপন করে।
দাজ্জালের আগমন ও কার্যকলাপের সময় আল্লাহ তা’আলা হযরত ঈসা (আ.)-কে পৃথিবীতে প্রেরণ করবেন। তিনি মসজিদে নামাজের সময় মেহেদী (আ.)-এর পেছনে ইমাম হিসেবে নামাজ আদায় করবেন এবং পরে দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তার আগমনই দাজ্জালের ফিতনার সমাপ্তি ডেকে আনবে।
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি, প্রযুক্তির অগ্রগতি ও সামাজিক বিভ্রান্তি দাজ্জালের আগমনের ক্ষেত্র তৈরি করছে বলে অনেক ইসলামি চিন্তাবিদ মনে করেন। তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত তাদের ঈমান দৃঢ় করা, সৎকাজে উৎসাহিত থাকা ও কোরআন-হাদীসের আলোকে জীবন গঠন করা।
ইসলাম আমাদের সতর্ক করেছে দাজ্জালের মতো প্রতারকদের থেকে বাঁচতে। তাই এখন থেকেই আমাদের আত্মা, মন ও পরিবারকে ঈমানের আলোয় আলোকিত করে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।