প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১০:২০
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যেখানে ছোট থেকে বড় প্রতিটি কাজেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারিত। মুসলমানের জীবনে নিয়তের গুরুত্ব এতই বেশি যে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে।’ (সহীহ বুখারী, হাদিস ১)
একজন মুমিনের প্রতিটি কাজে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত থাকা উচিত। দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কাজ আছে যা সাধারণ মনে হলেও, সৎ নিয়ত থাকলে তা ইবাদতের মর্যাদা পায়। যেমন, পরিবারের জন্য উপার্জন, রোগীর সেবা করা, অন্যকে সাহায্য করা—এসব কাজ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়, তাহলে তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘তারা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে খাদ্য দান করে, বলে—আমরা তোমাদেরকে কেবল আল্লাহর উদ্দেশ্যে খাওয়াচ্ছি, তোমাদের নিকট থেকে কোনো প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা চাই না।’ (সূরা আল-ইনসান, আয়াত ৯)
এই আয়াত ও হাদিস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, একজন মুসলমান কেবল বাহ্যিক কাজ নয়, বরং অভ্যন্তরীণ নিয়তের বিশুদ্ধতার দিকেও মনোযোগ দেয়। নিয়ত যদি খাঁটি হয়, তবে ছোট কাজও মহান আল্লাহর দরবারে মূল্য পায়।
তবে নিয়তের বিশুদ্ধতা অর্জনের জন্য আত্মশুদ্ধি জরুরি। অহংকার, রিয়া (লোক দেখানো), স্বার্থপরতা—এসব মনোভাব নিয়তকে কলুষিত করে ফেলে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত নিজের নিয়তকে সবসময় পরীক্ষা করে দেখা এবং তা আল্লাহর সন্তুষ্টিমুখী রাখা।
আমাদের জীবনে এমন অনেক সময় আসে, যখন নিয়ত হয়তো ঠিক থাকে না। তখনই প্রয়োজন তওবা করে ফিরে আসা এবং নিয়তকে পরিশুদ্ধ করা। কেননা, নিয়ত ঠিক না হলে আমলের মূল্যহীনতা ঘটে, যা কিয়ামতের দিন ভয়াবহ ফল বয়ে আনতে পারে।
তাই আসুন, আমরা আমাদের প্রতিটি কাজ শুরু করার আগে নিয়ত বিশুদ্ধ করি। যেন আল্লাহর সন্তুষ্টিই হয় আমাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।