প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১১:৬
পবিত্র জুমার দিন ইসলামে এক বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। এই দিনটি মুসলিমদের সাপ্তাহিক ঈদের মতো, যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং গুনাহ মাফের সুযোগ মেলে। হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, জুমার দিন এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা কবুল হয়।
ইমাম বোখারী ও মুসলিমের হাদিস মতে, জুমার দিন আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই পৃথিবীতে পাঠানো হয়। তাই জুমা শুধু সাপ্তাহিক সালাত নয়, বরং এটি সৃষ্টির স্মরণ ও মানুষের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন।
জুমার দিন গোসল করা, পরিষ্কার পোশাক পরা, আতর ব্যবহার করা এবং আগেভাগে মসজিদে যাওয়া সুন্নত। বিশেষ করে সূরা কাহফ পাঠ করার ব্যাপারে রাসূল (সা.) জোর দিয়েছেন। এটি শয়তান থেকে রক্ষা করে এবং কিয়ামতের আলো হিসেবে কাজ করে।
এ দিন মুসলমানদের জন্য জামাআতের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। হাদিসে এসেছে, কেউ যদি তিনবার বিনা কারণে জুমার নামাজ বাদ দেয়, তবে তার অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেওয়া হয়। তাই জুমার নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম এবং এটিকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।
জুমার দিন বিশেষভাবে দরুদ শরীফ পাঠ করার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা এই দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।” এটা একদিকে রাসূলের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ, অন্যদিকে তা আল্লাহর রহমত অর্জনের মাধ্যম।
এই দিনে মুনাজাত করারও বিশেষ ফজিলত রয়েছে। ফজরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত যে কোনো সময়ে একটি বিশেষ মুহূর্ত থাকে, যেটি দোয়া কবুলের জন্য নির্ধারিত। অনেক আলেমের মতে, এটি আসরের পর থেকে মাগরিবের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়। তাই জুমার দিন বেশি করে দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জুমার দিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো সাদকাহ প্রদান। হাদিসে আছে, দানের মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় এবং বিপদ দূর হয়। তাই এই দিনে গরিব-দুঃখীর সাহায্যে এগিয়ে আসা একটি পুণ্যের কাজ। এটি শুধু দুনিয়ার কল্যাণই নয়, আখিরাতের সফলতারও উপায়।
বর্তমান সময়ে জুমার দিনে আমরা যেন শুধু নামাজ আদায়েই সীমাবদ্ধ না থাকি। বরং এই দিনটিকে আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর পথে ফিরে আসা এবং জীবনের গুনাহ মাফের এক বিরল সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করি। জুমার বার্তার আলো ছড়িয়ে দিই নিজের পরিবার ও সমাজে, যাতে ইসলামি মূল্যবোধ পুনরায় জাগ্রত হয়।