প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৫, ১৯:৫৯
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা সদরের বাজার ও ওয়াপদার পাশে বসবাসকারী শত শত পরিবার এখন নদী ভাঙনের হুমকিতে দিন কাটাচ্ছেন। ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তা।
কপোতাক্ষ নদ ঘেঁষা এই এলাকার মানুষ বহু বছর ধরে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে আসছে। ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে বহু দোকান, পুরাতন হাসপাতাল ভবন, সরকারি কার্যালয় এবং শত শত বিঘা জমি। এখন হুমকির মুখে রয়েছে বাজারের অবশিষ্টাংশ, থানা ভবন, উপজেলা পরিষদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এবং বসতবাড়ি।
সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ১৫ দিনের মধ্যে নদীর ধারে থাকা স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। এ ঘোষণায় আতঙ্কে ভুগছেন ওয়াপদার পাশে বসবাসকারী পরিবারগুলো। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী খননের সময় সিএস ম্যাপ অনুযায়ী মাঝ দিয়ে খনন না করে রাজনৈতিক প্রভাবে একপাশ দিয়ে খনন করা হয়। যার ফলে আজকের এই ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
বাজার রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে এলাকাবাসী। তারা মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ করেও কার্যকর কোনো সমাধান পাননি। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানিয়েও হতাশ হয়েছেন বলে জানান অনেকে।
স্থানীয়দের দাবি, যদি স্থাপনা অপসারণ করতেই হয় তবে সেটি প্রয়োজন অনুযায়ী সীমিত পর্যায়ে হোক। অন্যথায় বহু পরিবার পথে বসে যাবে। তারা আরও বলেন, যারা বৈধভাবে রাজস্ব দিয়ে বসবাস করছে, তাদের উচ্ছেদ না করে স্থায়ী সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি।
সবচেয়ে জরুরি দাবি হচ্ছে—দ্রুত টেকসই ব্লক ও বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে বাজার ও আশপাশের এলাকা রক্ষা করা। তারা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগে নদীর প্রবাহ ঠিক রেখে সঠিকভাবে খনন ও রক্ষণাবেক্ষণ না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
এই পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে সোমবার বিকেলে আশাশুনি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বক্তব্য শোনেন।
ইউএনও আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন। এ সময় বাজার কমিটি ও প্রেস ক্লাবসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।