প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৭
ইসলাম ধর্মে মানুষের নৈতিক চরিত্র বা আখলাককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোরআন এবং হাদীসের অসংখ্য স্থানে ভালো ব্যবহারের গুরুত্ব, মুমিনের আচরণ এবং মানুষের সঙ্গে সদাচরণের উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সবচেয়ে ভারী যে আমলটি থাকবে, তা হচ্ছে তার উত্তম আখলাক। এটি বোঝায় যে, শুধু নামাজ-রোজা নয়, বরং মানুষের সঙ্গে আচরণই একটি মুমিনের মর্যাদা নির্ধারণে বিশাল ভূমিকা রাখে।
হাদীসে এসেছে, হজরত আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে যার আখলাক সবচেয়ে উত্তম।” (তিরমিজি: ২০১৮)। এই হাদীস স্পষ্ট করে যে, উত্তম চরিত্র একজন মুমিনকে নবীজির সান্নিধ্যে নিয়ে যেতে পারে, যা প্রতিটি মুসলমানের পরম কাম্য।
এছাড়াও কোরআনের অনেক স্থানে মহানবী (সা.)-এর চরিত্রের প্রশংসা করে বলা হয়েছে, “তুমি তো নিশ্চয়ই মহান চরিত্রের অধিকারী।” (সূরা ক্বলম: ৪)। রাসুল (সা.) তার জীবনে কখনো কাউকে কটুকথা বলেননি, কাউকে ছোট করে দেখেননি, বরং সকলের সঙ্গে দয়া ও সহনশীলতায় আচরণ করতেন। তাঁর এই গুণাবলি আমাদের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়।
আজকের সমাজে যখন মানুষ ধৈর্যহীন, রূঢ় ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে, তখন ইসলামের এই শিক্ষা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়। একজন প্রকৃত মুসলমান কখনোই অভদ্র, কঠোর বা অহংকারী হতে পারে না। বরং সে সব সময় নম্র, ভদ্র ও সহনশীল আচরণ করবে এবং মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করবেই।
ভালো চরিত্র শুধু দুনিয়ার জন্য নয়, আখিরাতেও মুক্তির অন্যতম মাধ্যম। একজন ভালো মুমিনের জন্য উত্তম চরিত্র এমন এক সফরসঙ্গী, যা কবর, হাশর এবং কিয়ামতের দিন তার পাশে থাকবে এবং তার আমলনামা ভারী করে দেবে। তাই এখন থেকেই আমাদের সকলের উচিত নিজের আচরণ ও চরিত্র পরিশুদ্ধ করা।
সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই আখলাক শেখানো, পরিবারে সুন্দর ব্যবহারের চর্চা করা এবং সমাজে দয়ালু আচরণ করা ইসলামি দৃষ্টিতে অত্যন্ত মূল্যবান। কারণ ইসলাম শুধু ইবাদত নয়, জীবনব্যবস্থার একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা, যার প্রতিটি ধাপে সদাচরণের গুরুত্ব সুস্পষ্ট।