প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৫, ২০:৪২
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ও প্রকল্প বণ্টনে চরম বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে ‘সচেতন মারমা ও ত্রিপুরা সমাজ’ নামে একটি সংগঠন। সোমবার সকালে খাগড়াছড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই অভিযোগ তুলে ধরেন এবং সংশ্লিষ্টদের অপসারণসহ চার দফা দাবি পেশ করেন।
সংগঠনের মুখপাত্র রুমেল মারমা লিখিত বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও যুগ্ম-সচিব কংকন চাকমা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রকল্প ও খাদ্যশস্য বরাদ্দে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন। বরাদ্দের সিংহভাগ দেওয়া হয়েছে চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে, অন্যদিকে মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙালি জনগোষ্ঠী চরমভাবে বঞ্চিত হয়েছেন।
তিনি জানান, পাঁচ দফা বরাদ্দে মোট ২ হাজার ২৭৩ মেট্রিক টন খাদ্যশস্যের মধ্যে ১ হাজার ৮৯২ টন বরাদ্দ পেয়েছে চাকমা সম্প্রদায়, যেখানে মারমা পেয়েছে মাত্র ১০২ টন, ত্রিপুরা ৬৬ টন এবং বাঙালি ও অন্যান্যরা ২১৩ টন। এছাড়া পঞ্চম দফা বরাদ্দে সুবিধা পেয়েছেন মামলার এজাহারভুক্ত আওয়ামী লীগ নেতারাও।
সংগঠনটি আরও অভিযোগ করে, আওয়ামী লীগপন্থী জনপ্রতিনিধিদের পুনর্বাসন এবং সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট নীতিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি কালায়ন তালুকদারকেও সম্প্রতি ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের বণ্টন শুধু বৈষম্য নয়, বরং পার্বত্য এলাকায় সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করার প্রক্রিয়া বলেও দাবি করা হয়।
এসময় উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও যুগ্ম-সচিব কংকন চাকমাকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি পার্বত্য তিন জেলার প্রকল্প ও বরাদ্দে ন্যায্যতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
তারা আরও দাবি করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও টাস্কফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের স্থান দিতে হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, সাত দিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে পার্বত্য তিন জেলায় লাগাতার সড়ক ও নৌপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সূর্য কিরণ ত্রিপুরা, প্রশান্ত ত্রিপুরা, মোচাই মারমা, সীমা ত্রিপুরা ও অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।