প্রকাশ: ২ জুলাই ২০২৫, ১৮:২১
আদমশুমারির পর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে একটি সাংবিধানিক বিশেষায়িত কমিটি গঠনের ব্যাপারে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আলোচনার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগে এই কাজ একান্তভাবে নির্বাচন কমিশনের আওতায় থাকলেও এখন স্বচ্ছতা এবং জটিলতা মোকাবেলায় একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন করা হবে যা কমিশনকে সহযোগিতা করবে ও সুপারিশ দেবে।
ডা. তাহের আরও জানান, সামনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও সময় কম থাকায় ত্রয়োদশ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনই বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে এবং তাদের সুপারিশক্রমে সীমানা নির্ধারণ করা হবে। এই উদ্যোগ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে, কারণ সীমানা নির্ধারণের অনিয়ম অনেক সময় নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করে।
বিশেষায়িত কমিটিতে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন, যারা জরিপ, ভৌগোলিক অঞ্চল সমন্বয় এবং ভোটের আনুপাতিক দিকসহ নানা বিষয়ে কাজ করবেন। এর ফলে সঠিক ও সুষ্ঠু সীমানা নির্ধারণ সম্ভব হবে। সংবিধানে এ কমিটির উল্লেখ থাকায় এটি স্থায়ী ও সাংবিধানিক মর্যাদা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ডা. তাহের বলেন, ‘কমিটি’ শব্দটি ব্যবহার করায় ঐকমত্য হয়েছে। বিএনপির কিছু আপত্তি থাকলেও দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে তারা ‘কমিটি’ শব্দ ব্যবহারে সম্মত হয়েছে এবং সংবিধানে সংযোজনের পক্ষেও মত বদল করেছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে ‘কমিশন’ শব্দ ব্যবহারে আগ্রহ থাকলেও ঐক্যের স্বার্থে ‘কমিটি’ মেনে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত ১৫ বছরে বিভিন্ন সময়ে অনেক সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন হয়েছে, যা কখনো কখনো নির্বাচনে ব্যক্তিগত সুবিধা দিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। নতুন বিশেষায়িত কমিটির মাধ্যমে এ ধরনের অনিয়ম দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এই উদ্যোগ দেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সহায়ক হবে।