প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ২০:২৬
বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর পদে দশ বছরের বেশি দায়িত্ব পালনের সীমাবদ্ধতায় একমত হলেও সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটির প্রস্তাবে রাজি নয় বলে জানিয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ৫ম সংশোধনীর মূলনীতি এবং ঐকমত্য কমিশনের নতুন প্রস্তাবে বিএনপি রাজি হয়েছে। কিন্তু এর মাধ্যমে পূর্ণ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটির বদলে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কমিশন বা সার্চ কমিটি গঠন করলেই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংস্কার এনে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্তি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। নতুন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দরকার নেই বলে তার মত। তিনি বলেন, আইন সংস্কারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত, নির্বাহী বিভাগ দুর্বল করা নয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, অতীতে একদল স্বৈরাচারী শাসনের কারণে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমিয়ে আনার চিন্তা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তা আর প্রাসঙ্গিক নয়, তাই সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটি নিয়ে বিএনপি একমত নয়। তবে দশ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার ব্যাপারে আংশিক আলোচনা হয়েছে এবং সেটিতে দলটি একমত।
বিএনপির এই অবস্থান রাজনৈতিক সংস্কারের প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। দলটি মনে করে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমাবদ্ধ রাখা হলে ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে সহায়তা হবে। এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সংশোধনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা বাড়ানো সম্ভব হবে।
বিষয়টি নিয়েও রাজনৈতিক মহলে নানা মতামত ও আলোচনা চলছে। অনেকেই মনে করেন, বিএনপির মতামত বাস্তবায়িত হলে এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও সুসংগঠনের জন্য সহায়ক হবে। তবে সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটির বিরোধিতার কারণে সংশ্লিষ্ট আইন ও নিয়মাবলীতে পরিবর্তন আনা কতটা সাফল্য পাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, বিএনপি রাজনৈতিক সংস্কারে অংশ নিতে আগ্রহী, তবে দলটির কাছে গুরুত্বপূর্ণ যে কোন সংস্কার প্রশাসনিক ক্ষমতা ক্ষীণ করার পরিবর্তে কার্যকরী ও জবাবদিহি নিশ্চিতকারী হবে। আগামী দিনগুলোতে এ বিষয়ে আরও আলোচনা ও রাজনৈতিক চিত্র পরিবর্তন হতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সঙ্গে বিরোধীদলের এ রকম প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক। তবে সমঝোতার পথে পৌঁছাতে উভয় পক্ষেরই গঠনমূলক ভূমিকা থাকা জরুরি।