প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ২১:৩২
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের অস্থিরতা ও গুঞ্জনের মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠকের সূচনা হয় বিএনপির প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে। এরপর একে একে জামায়াতে ইসলামীর ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিরাও এই আলোচনায় অংশ নেন।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসে। দলটির পক্ষে নেতৃত্ব দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। জানা গেছে, বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, নিরপেক্ষ নির্বাচন, প্রশাসনের ভূমিকা ও রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক আস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করায় এই প্রতিনিধি দলে তার অনুপস্থিতি লক্ষ করা যায়। তার পরিবর্তে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নেতৃত্ব দেন এবং বৈঠকে দলের বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন।
বিএনপির সঙ্গে বৈঠক শেষে রাত ৮টায় জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল যমুনা ভবনে প্রবেশ করে। এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। দলটির পক্ষ থেকে বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সাংবিধানিক অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে মত বিনিময় করা হয়।
এরপর রাত সাড়ে ৮টায় এনসিপির প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়। এই দলের নেতৃত্ব দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা মুশফিক উস সালেহীন, হাসনাত আবদুল্লাহ ও তাসনিম জারা। তারা বর্তমান সংকট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের সংলাপ ও মতবিনিময়কে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এই আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গঠনের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
জনগণের প্রত্যাশা, এসব আলোচনার ফলাফল শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবিক পরিবর্তনের দিকে যাবে। একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে এমন আশাই রাখছে সচেতন মহল।