সরাইলে এসএসসি ফল বিপর্যয়: শিক্ষক-ক্লাস ফাঁকি বিতর্ক

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফলাফলের এ চিত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা এবং পাঠদানে অনীহারই ফল। তারা দাবি করেছেন, অনেক শিক্ষক নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হন না, কেউ কেউ ক্লাস ফাঁকি দিয়ে উপজেলা চত্বরে ঘুরে বেড়ান অথবা প্রাইভেট পড়ানোয় বেশি মনোযোগ দেন। এমনকি স্কুল চলাকালীন সময়েও তারা নানা সংগঠনের মিটিং বা ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন।

সরাইল উপজেলায় মাধ্যমিক, দাখিল মাদরাসা ও উচ্চমাধ্যমিক মিলে মোট ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং কলেজ রয়েছে ৩টি। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই এই উপজেলায় ফলাফল নিম্নমুখী হলেও শিক্ষার মানোন্নয়নে নেই কার্যকর পদক্ষেপ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঠিক একাডেমিক তদারকি ও প্রশাসনিক নজরদারির অভাব স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জীবন ভট্টাচার্য সরাইলের দায়িত্বে থেকে অভিযোগগুলোর সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "শিক্ষকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য। সকাল ৬টা থেকে প্রাইভেট পড়ানো, ক্লাসে অনুপস্থিতি এবং দায়িত্ব অবহেলা ফলাফলে প্রভাব ফেলছে।"

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে ফলাফল পর্যবেক্ষণ করছি। বিষয়টি এখনই গুরুত্বসহকারে না দেখলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ অবস্থা দেখা দিতে পারে। ইতোমধ্যে অভিভাবক সমাবেশ শুরু হয়েছে এবং শিগগিরই শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শিক্ষক, অভিভাবক এবং প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া সরাইলে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। এখনই কঠোর তদারকি এবং শিক্ষকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারলে আগামী বছরগুলোতে ফলাফল আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।