প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ১৮:১৭
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ তাহের। তিনি বলেন, জনগণ ৫ আগস্টের পর থেকে সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বাইরে সভা-সমাবেশ করে সংস্কারের কথা বললেও ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিলে তার বিপরীত আচরণ করে। এটি একটি আত্মঘাতী অবস্থান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, যারা সংস্কার মানতে চায় না, তাদের নিশ্চয়ই কোনো গোপন মতলব রয়েছে, যা দেশের কল্যাণের পরিপন্থী। তাহের বলেন, সংস্কার কেবল জামায়াতের জন্য নয়, এটি গোটা দেশের ভবিষ্যতের জন্য জরুরি। এ সময় তিনি ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের দাবিও পুনর্ব্যক্ত করেন।
তাহের বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে টাকা দিয়ে ভোট কেনার সুযোগ থাকবে না, তাই স্বচ্ছ নির্বাচন চায় না যারা, তারা এই পদ্ধতির বিরোধিতা করছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা পার্লামেন্টে বসে সংস্কার করবেন বলেন, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে— কে আপনাদের সেই পার্লামেন্টে বসাবে? আপনারা ভাবছেন আবারও কোনোভাবে দখল করে ক্ষমতায় যাবেন, অথচ জনগণ আর সেই সুযোগ দেবে না।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়ে বিএনপি সংস্কারের জন্য একমত হয় না, অথচ বাইরে সংস্কারের বুলি ঝাড়ে। জনগণ এসব ভণ্ডামি বুঝে গেছে। এখন জনগণের স্লোগান একটাই— পরিবর্তন চাই, স্বচ্ছতা চাই, জনগণের পক্ষে রাজনীতি চাই। তাহের বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ রাজনৈতিক সচেতন। তারা জানে কারা সত্যিকারের দেশপ্রেমিক আর কারা স্বার্থান্বেষী।
তাহেরের মতে, দেশের আগামী নির্বাচনে জিতবে সেই শক্তি যারা চাঁদাবাজবিরোধী, দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির পক্ষপাতী এবং জনগণের রায়ে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে তারা কার পক্ষে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢলই এর স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটি সুশাসনভিত্তিক, কল্যাণমুখী, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলনে কেউ পিছিয়ে গেলে সে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াবে। জামায়াত সেই ইতিহাস রচনায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলেও দাবি করেন তিনি।
ডা. তাহের আরও বলেন, যারা চায় পরিবর্তন, তাদের আজ একসঙ্গে হাঁটতে হবে। এই ঐক্যের মাধ্যমেই সুশাসনের সূর্য উদিত হবে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন বাস্তবায়নই হবে প্রথম পদক্ষেপ, যা দেশকে দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অবশেষে তিনি বলেন, রাজনীতি এখন আর গোষ্ঠীবিশেষের খেলা নয়। এটি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার। সুতরাং সব রাজনৈতিক শক্তিকে জনস্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।