জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় মুখ আলী আহসান জুনায়েদ নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, প্ল্যাটফর্মটির নাম হবে ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)’।
আলী আহসান জুনায়েদ জানান, "জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার" নিয়ে গঠিত হতে যাওয়া এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম দেশের ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে সামনে এগোবে। তিনি বলেন, “আমরা সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, যার মধ্যে রয়েছে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ও দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন।”
তার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘আপ বাংলাদেশ’-এর প্রাথমিক লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর ও জুলাইয়ের কথিত গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা, আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে নিষিদ্ধের জন্য জনমত গঠন এবং জুলাইয়ের আন্দোলনে আহত ও শহিদদের পরিবারের অর্থনৈতিক পুনর্বাসন।
তিনি আরও লেখেন, “আমাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন ঘটানো। আমরা এমন একটি সমাজ চাই, যেখানে নৈতিকতা, যোগ্যতা ও মানবিকতা হবে নেতৃত্বের ভিত্তি। সামাজিক সুবিচার, ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা, ও নাগরিক মর্যাদার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করাই আমাদের উদ্দেশ্য।”
জুনায়েদ বলেন, ‘আপ বাংলাদেশ’ চারটি প্রধান "রাহুগ্রাস" থেকে দেশকে মুক্ত করতে চায়— ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ এবং দুর্নীতি। তিনি বলেন, “এই চার বিষাক্ত ধারা বাংলাদেশের রাজনীতি, প্রশাসন ও সমাজকে গ্রাস করেছে। আমরা এই ধারা ভেঙে দিয়ে নতুন এক দিগন্তের দিকে যাত্রা করতে চাই।”
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং একটি বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ দেশের প্রত্যাশা নিয়েও প্ল্যাটফর্মটি অগ্রসর হবে বলে জানান তিনি। “আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র কাঠামোর রূপরেখা দিচ্ছি, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা, সম্মান ও সুযোগ থাকবে।”
প্রসঙ্গত, আলী আহসান জুনায়েদ এবং রাফে সালমান রিফাত—উভয়েই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আত্মপ্রকাশের সময় তারা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। যদিও শেষ মুহূর্তে এনসিপিতে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আলোচনার মোড় ঘুরে যায়।
পরবর্তীতে তারা জানিয়ে দেন, একটি ভিন্নধারার, আদর্শিক ও দূরদর্শী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আসবেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, এপ্রিলে ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’-এর আত্মপ্রকাশ ঘটছে।