প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৩
আজ ১৬ জুলাই, দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘জুলাই শহীদ দিবস’। এক বছর আগে এই দিনে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ছাত্রনেতা আবু সাঈদ। তার আত্মত্যাগের স্মরণে সরকার ১৬ জুলাইকে জাতীয়ভাবে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, দিবসটি প্রতি বছর ‘খ’ শ্রেণির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালিত হবে। প্রজ্ঞাপনটি স্বাক্ষর করেন উপসচিব তানিয়া আফরোজ। শহীদ দিবস উপলক্ষে আজ দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।
এমনকি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতেও একইভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে। দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শহীদদের আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। মসজিদে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও নিজ নিজ আচার অনুযায়ী প্রার্থনা করছে।
আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিতে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ দুই হাত মেলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন। মাত্র ১৫ মিটার দূর থেকে পুলিশের শটগানের গুলিতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
তার এই দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং আন্দোলনটি একটি গণজাগরণে রূপ নেয়। শহীদ আবু সাঈদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে দেশের ছাত্র সমাজ নতুনভাবে সংগঠিত হয় এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনের ভিত শক্ত হয়। এক বছর পর আজ, তার স্মরণে এই দিনটি পালিত হচ্ছে শোক, কৃতজ্ঞতা ও নতুন প্রত্যয়ে। সরকার দিবসটিকে জাতীয় মর্যাদায় উদযাপন করার মাধ্যমে তার আত্মত্যাগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।