প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৭:৫৩
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার পরও প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করে তারা বিশাল পরিমাণ কাগজপত্র ট্রাকে করে নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছিল। তবে নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাইয়ে কিছু ঘাটতি পাওয়ায় দলটিকে নতুন করে কিছু নথিপত্র জমা দিতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিকভাবে ৬২টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি পাঠানো হবে। যেসব দলে ঘাটতি বা ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, তাদেরকে ১৫ দিনের সময়সীমার মধ্যে তা সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, পরবর্তী ধাপে অন্যান্য দলগুলোকেও চিঠি পাঠানো হবে।
এর আগে, জুনের শেষের দিকে এনসিপি দলীয় গঠনতন্ত্র, কমিটির তালিকা, সদস্য সমর্থনের প্রমাণ, ব্যাংক হিসাব, লোগো ও পতাকার ছবি এবং দলীয় ইশতেহারসহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, দলীয় প্রতিনিধি দল নিয়ে তারা ট্রাকে করে সকল কাগজ নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন। তাদের বিশ্বাস ছিল, এত বিশদ নথিপত্র দেওয়ার পর আর কোনো ঘাটতি থাকবে না।
নির্বাচনে অংশ নিতে নতুন দলের জন্য নির্বাচন কমিশনের শর্তের মধ্যে রয়েছে একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ জেলায় কার্যকর কমিটি এবং কমপক্ষে ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানার দুই শতাধিক ভোটারের সমর্থনপত্র জমা দেওয়া। এছাড়া দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার, দলের লোগো ও পতাকার ছবি, কেন্দ্রীয় কমিটির তালিকা এবং ব্যাংক বিবরণী জমা দিতে হয়।
নিবন্ধনের আবেদনের পর কমিশন যাচাই-বাছাই করে দেখে শর্ত পূরণ হলে দলটিকে প্রতীকসহ নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়। এনসিপি এই শর্তগুলোর বেশিরভাগই পূরণ করলেও কিছু কারিগরি ও তথ্যগত ঘাটতির কারণে তারা প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি। নতুন দলে অন্তর্ভুক্ত হতে শতাধিক দল আবেদন করলেও অধিকাংশই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এনসিপি আশা করছে, নতুন করে সংশোধিত নথিপত্র জমা দিয়ে তারা কমিশনের চূড়ান্ত যাচাইয়ে উত্তীর্ণ হবে।
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে এনসিপির এই উদ্যোগ রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এত বিশাল পরিমাণ ডকুমেন্ট দিয়েও কেন দলটি বাদ পড়ল, এবং তা নিয়ে কমিশনের ব্যাখ্যা কতটা গ্রহণযোগ্য। এখন দেখার বিষয়, দ্বিতীয় দফায় সংশোধিত আবেদন জমা দিয়ে এনসিপি তাদের কাঙ্ক্ষিত নিবন্ধন আদায় করতে পারে কি না।