প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১২:৪১
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সকালে গান্ধীয়াশুর এলাকায় ঘোনাপাড়া-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কে ইউএনওর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রশাসন দাবি করেছে, এই হামলা করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করেন। এনসিপির পদযাত্রা ঠেকাতে তারা সড়কে অবস্থান নেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হলে প্রথমে পুলিশের গাড়িতে হামলা ও পরবর্তীতে ইউএনওর গাড়িবহরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসান জানান, “জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচি ছিল শহরের পৌর পার্কে পদযাত্রা ও পথসভা। সেটিকে বানচাল করার জন্যই এই হামলা চালানো হয়েছে।” তিনি বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে গেলে প্রথমে আমার গাড়িবহর লক্ষ্য করে হামলা হয়, এরপর একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।”
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকেও হামলার বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা জানায়, রাজনৈতিক সহিংসতা দমনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত হামলায় জড়িত কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
জানা গেছে, এনসিপির পদযাত্রা ও পথসভা ছিল পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। সরকারবিরোধী এই রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে থেকেই সতর্ক ছিল। তবে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিতে শুরু করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলার সময় কিছু লোক দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলায় অংশ নেয়। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়, যার ফলে সাধারণ যানবাহন চলাচলেও সমস্যা দেখা দেয়। অনেক মানুষ আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যায়।
এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান ও সহিংসতা আগামীতেও আরও বড় উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি করেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর গোটা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।