প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫০
রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির মেলবন্ধনে গঠিত এই নতুন রাজনৈতিক দলটির নাম হবে 'জাতীয় নাগরিক পার্টি' (এনসিপি)। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আজ (শুক্রবার) দলটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের। একসাথে, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকেও অনেক সমর্থক জড়ো হয়েছেন এ ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে।
দলটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা মুখরিত করেছেন। রংপুর, খুলনা, নীলফামারী, জয়পুরহাট, রাজশাহী, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মিছিল নিয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। অনেকের হাতে ছিল দলের পতাকা। অনুষ্ঠানস্থলে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোনো সাধারণ ব্যক্তি আমন্ত্রণপত্র ছাড়া প্রবেশ করতে পারছেন না। এদিকে, অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া, সাংবাদিকদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি কাভার করতে পারেন। অনুষ্ঠানস্থলে মেডিকেল টিম, অস্থায়ী ওয়াশরুম, পুলিশ বুথ, নারীদের জন্য বিশেষ বুথ এবং পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অনুষ্ঠানে নানা রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত থাকলেও, তারা অধিকাংশই জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং তাদের সহযোগী দলের নেতারা।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মো. নাহিদ ইসলাম, যিনি গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। দলের সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আখতার হোসেন, যিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়া, নতুন দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আছেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে সামান্তা শারমিন এবং আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার (নিভা), প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং যুগ্ম সমন্বয়ক হিসেবে আবদুল হান্নান মাসউদ। দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে সারজিস আলমকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
দলটির নামের ইংরেজি রূপ হবে 'ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি' (এনসিপি)। এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ, কাঠামো এবং নাম সংক্রান্ত আলোচনা গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়। নতুন রাজনৈতিক দলের উদ্ভব দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হতে পারে, যা ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।