প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ২০:৯
রাজধানীর গুলিস্তানে গত রোববার সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। আটকদের নাম-পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। আটকদের ধরার পেছনে বিস্তারিত কারণ প্রকাশ করা হয়নি। তবে এ নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত বছর আগস্টে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগসহ তার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সরকার এর আগেও ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
১২ মে জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে সরকারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ এবং এর সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ করার কারণগুলো বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলো দেশজুড়ে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল। সরকারের অভিযোগ, দলটি বিরোধী রাজনৈতিক দল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর হামলা, গুম, খুন, নির্যাতনসহ নানাবিধ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে অনেক আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এসব মামলার বিচারে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হচ্ছে। দলটির নেতাকর্মীরা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
সরকারের মতে, আওয়ামী লীগ এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলি জনমনে ভীতি সঞ্চার করে বিচার কার্যপ্রণালী ব্যাহত করছে। তাই সন্ত্রাস বিরোধী আইন অনুযায়ী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির সমস্ত কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের মিছিল, সভা, প্রকাশনা ও অনলাইন প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকবে।
এ ধরনের কঠোর সিদ্ধান্ত দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে। আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই পরিস্থিতিকে দেশের স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক বলে মনে করছেন।
আগামী দিনে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব রাজনৈতিক অবস্থান ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় কেমন প্রভাব ফেলবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সরকারের এই পদক্ষেপে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে কি না, তা সময়ের সঙ্গে বোঝা যাবে।