প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১০:৫৫
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করেছে। তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি বাসায় আত্মগোপন করে ছিলেন, এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে রাজধানী ও মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সোমবার রাত ১২টার কিছু সময় আগে তাকে ধানমন্ডির স্টার কাবাবের পেছনের একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তাকে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি হত্যা মামলার পাশাপাশি, মমতাজের বিরুদ্ধে আরও একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সিঙ্গাইরে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায়ও তার নাম এসেছে। গত বছরের ২৩ অক্টোবর, মমতাজ বেগমসহ ১০৯ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলায় আরও ৫০০ থেকে ৬০০ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মমতাজ বেগম একজন খ্যাতনামা লোকশিল্পী। তিনি একাধিকবার মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গণঅভ্যুত্থানের পর প্রায় দুই মাস গায়কী শিল্পী মমতাজ একটি ভিডিও নিয়ে ফেসবুকে ফিরে আসেন।
ভিডিওতে তাকে একটি কক্ষে বসে গান গাইতে দেখা যায়, যেখানে তার কণ্ঠে শোনা যায় জনপ্রিয় গান ‘আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবি’। এর মধ্য দিয়ে মমতাজ তার ফ্যানদের প্রতি এক ধরনের ইঙ্গিত দিয়ে নিজের উপস্থিতি জানান দেন। তবে, তার এই ফিরে আসা গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
গত বছরের অক্টোবরের ১০ তারিখে, মমতাজ বেগমসহ ৩৭ পুলিশ সদস্য এবং আরও ৯০ জনকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়। আদালতে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, মমতাজের নেতৃত্বে একাধিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এসব মামলা ছাড়াও, তার বিরুদ্ধে আরও কিছু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
মমতাজ বেগমের গ্রেফতার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তার রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা আবারও তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মমতাজের বিরুদ্ধে এসব মামলার দ্রুত তদন্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।